দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার রাতে কাঁথির শান্তিকুঞ্জে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কর্পোরেট ভোট ম্যানেজার প্রশান্ত কিশোর। উদ্দেশ্য ছিল শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করা। বোঝানো। কিন্তু পরিবহণ মন্ত্রী তখন অন্য জেলায় কালীপুজোর উদ্বোধনে ছিলেন। শুক্রবার বিকেলে সেই শুভেন্দুই ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন। সেই নন্দীগ্রামের মাটি থেকেই।
এদিন কালীপুজোর উদ্বোধন করতে নিজের বিধানসভা নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর কেউ কিন্তু নন্দীগ্রামে আসেননি। আমিই ছিলাম পাশে। তাঁর কথায়, “চরৈবেতি চরৈবেতি করে আমরা এগিয়ে যাব। আমাদের কেউ রুখতে পারবে না।”
প্রসঙ্গত, উমফানের পর শুধু নন্দীগ্রাম নয় গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ছুটে বেরিয়েছিলেন শুভেন্দু। কার ঘর ভেঙে গেছে, কার পানের বরজ মাটিতে মিশে গিয়েছে সেসব সরেজমিনে দেখে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছিলেন তৃণমূলের (এখনও) তরুণ এই নেতা। কখনও কন্টাই সমবায় ব্যাঙ্ক কখনও বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক কিংবা কখনও সতীশ সামন্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সেই টাকা দিয়েছিলেন। লকডাউন পর্বেও পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় জেলায় শবর পরিবারগুলির জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছিলেন শুভেন্দু।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রশান্ত কিশোর বাড়ি বয়ে দেখা করতে যাওয়ার পর এদিন পরিবহণমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য শুনে অনেকেই বলছেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা হয়তো কালীঘাটের উদ্দেশে বার্তা দিতে চাইলেন, স্বচ্ছন্দের পথেই তিনি এগোবেন। তাঁকে আটকানো যাবে না।
১০ নভেম্বর সকালে গোকুল নগরের সভা থেকে যে আগ্রাসী ঢঙে বক্তৃতা করেছিলেন শুভেন্দু তা নজিরবিহীন। স্পষ্ট করে কিছু না বললেও ইঙ্গিত যা দেওয়ার দিয়ে দিয়েছিলেন। বিকেলে শুভেন্দুর পাল্টা সভা করতে নন্দীগ্রামের হাজরাকাটায় গিয়েছিলেন ববি হাকিম, দোলা সেন পূর্ণেন্দু বসুরা।সেই সভা নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে শুভেন্দু বলেছিলেন, “খুব ভাল লাগছে,খুব ভাল লাগছে,১৩ বছর পরে নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়েছে!”
শোনা যাচ্ছে শুভেন্দুর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে ঘনঘন ফোন করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুকে নাকি সুব্রত বক্সীও ফোন করেছিলেন। এত কিছুর পরও এদিনের মন্তব্য শুনে অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূল-শুভেন্দু মানসিক বিচ্ছেদ হয়তো হয়েই গিয়েছে।