দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ২৬ মে এই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে বাংলা এবং ওড়িশা উপকূলে। ইতিমধ্যেই ইয়াস মোকাবিলায় চূড়ান্ত তৎপর রাজ্য প্রশাসন। এবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিদ্যুৎ, টেলিকম বিভাগের আধিকারিকরা।
ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখেন তিনি। ইতিমধ্যেই সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ৪৩টি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ইয়াস।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ফলে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রভাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য কি কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা জানানো হয়েছে। https://t.co/pnPTCYL2Fm
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2021
নিরাপদ জায়গায় মানুষকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার কোভিড-১৯ এ সংক্রমিতদের চিকিৎসায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2021
এর পরের ২৪ ঘণ্টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর ফের উত্তর -উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে ইয়াস।
বুধবার স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, এমনটাই পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও ওড়িশার পারাদ্বীপের মধ্যে দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানিয়েছে হওয়া অফিস।
রবিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ এই মুহূর্তে গভীর নিম্নচাপ রূপে ১৬ ডিগ্রি ১ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ ও ৯০ ডিগ্রি ২ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। এই মুহূর্তে আন্দামানের পোর্ট প্লেয়ার থেকে ৫৬০ কিলোমিটার উত্তরে উত্তর-পশ্চিম, ওড়িশার বালেশ্বর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে গভীর নিম্নচাপ।
সোমবার সকালে এই নিম্নচাপ আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে তা অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলেই জানিয়েছে আলিপুর। বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার স্থলভাগে পৌঁছনোর কথা ইয়াস-এর।
আলিপুর জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রূপে ইয়াস ওড়িশার পারাদ্বীপ ও পশ্চিমবঙ্গের সাগরের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করবে।
তবে গত বছরের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় আমফানের থেকে ইয়াস এর দাপট কম হওয়ার সম্ভাবনা। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, রাজ্যে ৪০-৪৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। মঙ্গলবার হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৭০ কিমি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৫ মে থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হবে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে পরবর্তী সময়ে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। বাকি জেলাগুলিতেও বৃষ্টি হবে। ২৬ মে ভারী বৃষ্টি হবে রাজ্যে। ২৭ মে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তাল হতে পারে সমুদ্র। ২৩ মে থেকে সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা মাঝ সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদের ২৩ তারিখ সকালের মধ্যে ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তুতি নিতে বিস্তারিত জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড়ের আগে পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেই এই নিয়ে টুইট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর টুইট, ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত জেলাগুলির ডিএম এবং এসপি, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সংস্থার সমস্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছি। শনিবার থেকেই প্রশাসনিক স্তরে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।