দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমপান–পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার বনগাঁয় আসেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধায়। ঝড়ে বিধ্বস্ত বনগাঁ মহকুমার ক্ষত সারিয়ে তুলতে সরকারি দপ্তরের পদক্ষেপের বিষয়ে খোঁজ খবর করেন তিনি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহকুমা এবং ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রিপল–সহ অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মানু্ষের হাতে ত্রাণ পৌঁছে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যে সব বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যে সব কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সরকারি নির্দেশে পঞ্চায়েত ধরে ধরে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে পরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারি অর্থসাহায্য পেতে পারেন।
এ বিষয়ে সরকারি কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে ছুটে যাচ্ছেন রাজ্যের সিনিয়র অফিসাররা। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশ মতোই এদিন বনগাঁয় আসেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার বনগাঁ মহকুমা শাসকের দপ্তরে তিনি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, সভাধিপতি বীণা মণ্ডল, বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপার তরুণ হালদার, মহকুমা শাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় এবং প্রাণীসম্পদ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি–সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরের জেলা স্তরের আধিকারিকরা।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যে আমরা কয়েকজন সিনিয়র অফিসার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন জেলার প্রশাসনকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে পরিদর্শনে যাচ্ছি। সেই অনুযায়ী এদিন বনগাঁয় এসে স্থানীয় প্রশাসন পঞ্চায়েত ধরে ধরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিস্তারিত বিবরণ–সহ তালিকা তৈরি হয়েছে। এতে সরকারি সাহায্য পেতে ক্ষতিগ্রস্তদের সুবিধে হবে। ঝড়ের পর বনগাঁ মহকুমা এলাকার রাস্তাঘাট দ্রুততার সঙ্গে পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। গাছ পড়ে কোনও বড় রাস্তা আটকে নেই।
বিদ্যুৎ সরবরাহ একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছে। দূরবর্তী গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে। ডিজি সেটের মাধ্যমে জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। মৃত গবাদি পশুর দেহ স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সৎকারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি হাসপাতাল, স্কুল মেরামত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকারি অর্থ বণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ত্রাণ বণ্টন নিয়ে দু–একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও সেটি ত্রাণের অপ্রতুলতার জন্য নয়। জেলা থেকে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রিপল পাঠানো হয়েছে।
সঠিক মানুষের হাতে দ্রুততার সঙ্গে যাতে সরকারি ত্রিপল পৌঁছোয়, তার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে মহকুমা স্তর থেকে অফিসার পাঠিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বাড়িতে সরকারি ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ এদিন বৈঠক শেষে কলকাতা ফিরে যাওয়ার আগে স্বরাষ্ট্র সচিব ঠাকুরনগরের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও ঘুরে দেখেন।