আজ বনগাঁয় মমতা ,মতুয়া-গড় থেকে পুরসভার ডামাডোল SIR  নিয়ে কী বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্ৰী? কৌতূহল!: দেখুন ভিডিও

0
28

 অর্পিতা বনিক ও রেশমী দাস – দেশেরসময়    বনগাঁ: এক দিকে ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের (সার) কারণে বিজেপির উপরে যে মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের একাংশ বেজায় চটে আছে, সেটা স্পষ্ট পদ্ম–নেতাদের কাছেও। যা তৃণমূলের জন্য স্বস্তির খবর।

অন্য দিকে, বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান বদল নিয়ে জোড়াফুল শিবিরের অন্দরে শুরু হয়েছে টানাপড়েন। এই ইস্যুতে কার্যত আড়াআড়ি বিভক্ত বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। যা আবার বিজেপির জন্য স্বস্তির। এই আবহে তৃণমূল–বিজেপি দুই শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বের নজর আপাতত উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর মতুয়া–ভূমে। দুই শিবিরেরই লক্ষ্য, সেখানকার ঘোলা জলে মাছ ধরা। আজ, মঙ্গলবার বনগাঁয় যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন  দুপুরে শহরের ত্রিকোণ পার্ক সংলগ্ন এলাকায়  একটি জনসভায় করবেন তিনি।

সব কিছু ঠিকঠাক চললে কিছুদিনের মধ্যেই বনগাঁয় দেখা যেতে পারে রাজ্য বিজেপির কোনও শীর্ষ নেতাকেও।

বনগাঁ পুরসভা নিয়ে ডামাডোলের মধ্যে আজ মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি সফল করতে জোর কদমে প্রস্তুতি নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব । জেলা তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হয়েছে , এদিনের সভা ও গাইঘাটার চাঁদপাড়া থেকে ঠাকুর নগর অভিমুখে প্রায় তিন কিলোমিটার পদযাত্রা এই দুটি কর্মসূচিতেই ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ উপস্থিত থাকবেন । দেখুন ভিডিও

মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ । বনগাঁ পুলিশ জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর পুলিশ কর্মী, অফিসার এসে পৌঁছে গিয়েছেন বনগাঁও গাইঘাটায় । পদযাত্রার কারণে চাঁদপাড়া বালিকা বিদ্যালয় দুদিন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে স্কুল সূত্রে ।

এদিকে বনগাঁর পুর প্রধান গোপাল শেঠকে দলীয় নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছিল , ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পদত্যাগ করতে। ১৪ নভেম্বর তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটিতে চলে গিয়েছেন ।

সূত্রের খবর, তিনি এখন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । ইতি মধ্যেই পুরসভার তৃণমূলের ৯ জন পুরসদস্য তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন । এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী পুরসভা নিয়ে কী বার্তা দেন ,সে দিকে তাকিয়ে বনগাঁ শহরের মানুষ । পাশাপাশি পুর প্রধান মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত থাকবেন কি না তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে I

‘সার’–এর জেরে সব থেকে বেশি উৎকণ্ঠা ছড়িয়েছে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁয়। নতুন ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মতুয়া সমাজের অনেকেই। যে মতুয়ারা ২০১৯ থেকে বিভিন্ন ভোটে বিজেপিকে ঢালাও সমর্থন জানিয়ে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই এখন বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নীতিকে। এই আবহে সেখানকার হারানো জমি ফিরে পেতে চাইছে তৃণমূ‍ল।

সূত্রের খবর, সোমবার দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বনগাঁর তৃণমূল নেতাদের ‘সার’ নিয়ে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি মনে করছেন, ‘সার’ নিয়ে উদ্বিগ্ন মতুয়া সমাজের পাশে আরও দৃঢ় ভাবে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে জোড়াফুলের। বস্তুত, সেই বার্তা নিয়ে আজ বনগাঁয় হাজির হচ্ছেন মমতা নিজেই। তিনি সেখানে জনসভা করবেন। আর চাঁদপাড়ায় মিছিলে হাঁটবেন। সেখান থেকে তিনি মতুয়াদের নাগরিকত্ব রক্ষা করার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তাই যে দেবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

এমনিতেই ‘সার’ নিয়ে মতুয়াদের ‘ক্ষোভ’ চিন্তায় ফেলেছে বিজেপিকে। তার উপরে আজ মমতার সভার পরে তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবিরের একাংশ।

আবার বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান বদল করা নিয়ে গত ১৮ দিন ধরে অস্থির পরিস্থিতি চলছে বনগাঁয়। চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ এই মুহূর্তে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। দলের নির্দেশের পরেও চেয়ারম্যান পদ ছাড়েননি তিনি। তাঁকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। যার এক দিকে আছেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলাররা। অন্য দিকে আছেন, চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ ও তাঁর অনুগামী কাউন্সিলাররা। এর মধ্যে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মতুয়ানেত্রী মমতাবালা ঠাকুর গোপালের পক্ষ নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

বিজেপি চাইছে, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে। মতুয়া ভোটের ধাক্কা তারা সামলে নিতে চাইছে গোপাল শেঠের বিদ্রোহ দিয়ে। ইতিমধ্যে বনগাঁর বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা–কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বিজেপির রাজ্য ‍নেতৃত্বের একাংশ। ফলে প্রত্যাশিত ভাবে আজ বনগাঁর সভা থেকে বিজেপির এই পরিকল্পনাও বানচাল করার চেষ্টা করবেন মমতা। গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বনগাঁয় গিয়েছিলেন তিনি। তখন বনগাঁর প্রয়াত বিধায়ক তথা গোপা‍লের বাবা ভূপেন শেঠের নাম একাধিকবার শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। এ বার বনগাঁয় গিয়ে মমতা ভূপেন শেঠের ছেলের উদ্দেশে কী বার্তা দেন, সে দিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। মমতাবালা বলেন, ‘যদি সুযোগ হয়, তা হলে বনগাঁ পুরসভার পরিস্থিতির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। তিনি অবশ্য সবটাই জানেন।’

মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপির গাইঘাটা বিধায়ক এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহা সঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি  সুব্রত ঠাকুর I  তিনি বলেন, ” নাটক করে লাভ নেই ।  মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষ  তৃণমূলের সঙ্গে নেই ।  লোক খেপিয়ে লাভ হবে না । মতুয়া উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব পাবেন ।  ভোটার তালিকায় তাঁদেরও নাম উঠবে ।

Previous articleMamata Banerjee মঙ্গলবার  এসআইআরের প্রতিবাদে বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কেমন? কি বললেন জেলা সভাপতি :দেখুন ভিডিও
Next article‘বাংলাকে আঘাত করলে প্রত্যাঘাত করব ,ভারতবর্ষ হেলিয়ে দেব’,  নিশ্চিন্তে ঘুমোন, আমি আছি: SIR নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে  মতুয়াগড়ে মমতার অভয়বাণী : দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here