দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মোঘল মিউজিয়াম নয়, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ মিউজিয়াম। সোমবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেন, আগ্রার মোঘল মিউজিয়ামের নাম বদলে করা হবে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ মিউজিয়াম। এদিন মুখ্যমন্ত্রী আগ্রা নগরীর উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখেন। তখনই তিনি বলেন, “মোঘলরা কী করে আমাদের হিরো হতে পারে?” যোগী ঘোষণা করেন, যা কিছু দাস মনোবৃত্তির চিহ্ন বহন করে, সে সবই বদলে ফেলা হবে।
২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পরে বেশ কয়েকটি জায়গার নাম বদল করেছেন যোগী। তাঁর জমানায় এলাহাবাদের নাম হয়েছে প্রয়াগরাজ। এর আগেও তিনি ঘোষণা করেছেন, উত্তরপ্রদেশে ‘দাস মনোবৃত্তির’ কোনও জায়গা নেই। সোমবারও তিনি টুইট করে বলেন, “আগ্রার মিউজিয়াম ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের নামে পরিচিত হবে। আপনাদের নতুন উত্তরপ্রদেশে দাস মনোবৃত্তির কোনও জায়গা থাকবে না। শিবাজি মহারাজ আমাদের হিরো। জয় হিন্দ। জয় ভারত।”
২০১৫ সালে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব আগ্রায় নতুন মিউজিয়াম গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। তাজমহলের কাছে ছয় একর জায়গা জুড়ে ওই জাদুঘর গড়ে তোলা হচ্ছে। দিল্লি থেকে তার দূরত্ব ২১০ কিলোমিটার। ওই জাদুঘরে মোঘল সংস্কৃতি, ভাস্কর্য, চিত্রশিল্প, রান্না, পোশাক, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রদর্শনী করা হবে।”
প্রথমে ১৫২৬ থেকে ১৫৪০ সাল পর্যন্ত ও পরে ১৫৫৫ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ভারতে মোঘল রাজবংশ শাসন করে। সেই আমলা দিল্লি ও আগ্রায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সৌধ গড়ে তোলা হয়। তার অন্যতম হল তাজমহল ও লালকেল্লা। ৩০০ বছরের শাসনকালে মোঘল সম্রাটরা সত্যিই হিন্দু প্রজাদের ওপরে অত্যাচার করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে বিতর্ক আছে।
শিবাজি ছিলেন ষোড়শ শতকের মারাঠা রাজা। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি মোঘলদের সঙ্গে যুদ্ধ করে কাটিয়েছেন।
২০১৮ সালে কংগ্রেস যোগী আদিত্যনাথের সমালোচনা করে বলে, তিনি ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাচ্ছেন।
কয়েক মাস আগে নাগরিকত্ব বিরোধী আন্দোলনের সময় যোগী প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছিলেন, যাঁরা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ‘বদলা’ নেওয়া হবে। এবার তিনি ফের প্রকাশ্য জনসভা থেকে নিদান দিলেন, “কথা না শুনলেই গুলি চালানো হবে।” এই মন্তব্যের পরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
উল্লেখ্য: তখন উত্তরপ্রদেশে কানাওয়ারিয়া উৎসব চলছিল। সেই উৎসবে শিবের মাথায় জল ঢালতে যান ভক্তরা। এই সময়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে রাস্তার গাড়ি চালকদের হামেশাই অশান্তি বাধে। যার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এই প্রসঙ্গে যোগী ঘোষণা করেন, কেউ যদি উৎসবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে তাকে গুলি মারা হবে। যোগী আদিত্যনাথ বলেন,আমরা কাউকে কোনও অনুষ্ঠান পালন করতে বাধা দিই না। আইনের মধ্যে থেকে সকলেই উৎসব পালন করুক, কোনও বাধা নেই। কিন্তু কেউ যদি শিবভক্তদের বাধা দেয়, দাঙ্গা করার চেষ্টা করে, সে কথা না শুনলেই গুলি চালানো হবে।