অস্ত্রচুক্তি: ভারত সাবমেরিন বিধ্বংসী ২৪টি মাল্টিরোল-রোমিও কপ্টার কিনছে আমেরিকা থেকে

0
737

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারত মহাসাগরে চিনের খবরদারি রুখতে অস্ত্রভাণ্ডারে নতুন করে শান দিচ্ছে ভারত। নির্ভুল নিশানা, ক্ষিপ্র গতি এবং এক ধাক্কায় শত্রুর ডুবোজাহাজকে তছনছ করে দিতে অত্যাধুনিক মাল্টিরোল-রোমিও কপ্টার এবার দেখা যাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। আমেরিকার সঙ্গে ৯০ কোটি ৫০ লক্ষ ডলারের চুক্তি হল ভারতের।

গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরের সময়েই দুই দেশের মধ্যে এই অস্ত্র চুক্তির কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছিল, নৌবাহিনীর জন্য ২৪টি মাল্টি-রোল এমএইচ-৬০ রোমিও অ্যান্টি-সাবমেরিন হেলিকপ্টার ও অ্যাপাচে কপ্টার কিনবে ভারত। পাশাপাশি আধুনিক সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার ব্যাপারেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল বলে জানা যায়। মার্কিন অস্ত্রনির্মাতা সংস্থা লকহিড মার্টিনের বানানো এই যুদ্ধ-হেলিকপ্টারগুলি কেনার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, সাবমেরিন বিধ্বংসী ওই হেলিকপ্টার কেনার ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি পাকা হয়ে গেছে। আগামী বছরের মধ্যেই ২৪টি মাল্টিরোল-রোমিও কপ্টার চলে আসবে ভারতের হাতে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য ২০০৭ সাল থেকেই মার্কিন সমরাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনার উৎসাহ বেড়েছে ভারতের। আর যেভাবে ভারত মহাসাগরে চিনের আধিপত্য উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, সেখানে জলসীমায় নজরদারি, ডুবোজাহাজের উপস্থিতি, তল্লাশি ও উদ্ধার কাজে অত্যন্ত দক্ষ কপ্টারের প্রয়োজন। ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে এখন আছে সি-কিং হেলিকপ্টার। ব্রিটেনের থেকে যা কেনা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। তার পরে তার আর আধুনিকীকরণ হয়নি। নজরদারি ও যুদ্ধ করার জন্য সি-হ্যারিয়ার বিমান আগেই অবসর নিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে শুধু পিএইট-আই বিমান। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই এমএইচ-৬০আর হেলিকপ্টার নৌবাহিনীর শক্তিকে আরও দ্বিগুণ করে তুলবে।

ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী মাল্টিরোল রোমিও কপ্টারকে বলে শিকারি কপ্টার। কারণ এই কপ্টারের নিশানা একেবারে নির্ভুল। শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজ চিহ্নিত করতে পারলেই তার উপর আঘাত হানতে পারে নির্ভুল নিশানায়। সমুদ্রে নজরদারি চালাতেও এর জুরি মেলা ভার। ক্রুজার এবং বিমানবাহী রণতরী থেকেও রোমিও কপ্টার ব্যবহার করা যায়। এমন হেলিকপ্টার থেকেটর্পেডো দেগে সমুদ্রের নীচে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা ডুবোজাহাজও গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়। ডুবোজাহাজ যতই গভীরে থাক, মাল্টিরোল হেলিকপ্টার তার গন্ধ পাবেই।

এই হেলিপক্টার ক্ষেপণাস্ত্র বহনেও সক্ষম। এর থেকে প্রয়োগ করা যাবে  ১০ রকম হেলফায়ার মিসাইল, ৩৮ রকমের উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রবাহী রকেট, এবং ৩০টি এমকে ৫৪ টর্পেডো। জলের উপরেও শত্রুপক্ষের জাহাজ বা বোটকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে। অন্য কপ্টারের মোকাবিলায় মেশিনগানও থাকে।

এই রোমিও কপ্টার ছাড়াও ডুবোজাহাজ ধ্বংসকারী শক্তিশালী হারপুর মিসাইল ও টর্পেডো কেনার কথাও হয়েছিল আমেরিকার সঙ্গে। পেন্টাগন জানিয়েছিল, ভারতীয় নৌসেনার পেট্রল এয়ারক্রাফ্টকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য সাবমেরিন বিধ্বংসী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেবে আমেরিকা। ১০ এজিএম-৮৪এল হারপুন ব্লক-২ মিসাইল যার পাল্লা প্রায় ১২৪ কিলোমিটার শীঘ্রই ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাছাড়াও ওজনে হালকা ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী এমকে৫৪ এক্সারসাইজ তিনটি টর্পেডোও দেবে আমেরিকা। তবে এইসব সমরাস্ত্র কেনার ব্যাপারে কথাবার্তা এখনও চলছে।

Previous article১৫৭ জন পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করল শান্তিনিকেতন থানা
Next articleএক নজরে: অর্থনৈতিক প্যাকেজ নিয়ে তৃতীয় দফার বৈঠকে নির্মলা সীতারমন কী বলছেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here