অগ্নিগর্ভ দিল্লি: সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০!এখই সেনা নামানো হবে না জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

0
349

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সিএএ প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উত্তাল দিল্লি। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে ক্রমেই আরও ব্যাপক আকার ধারণ করছে রাজধানীতে। মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০। আহত অন্তত ১০০ জন, তার মধ্যে ৪৮ জন পুলিশকর্মী। সূত্রের খবর, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোড়া, আগুন লাগিয়ে দেওয়া, দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ক্রমেই বড় আকার নিচ্ছে।

সোমবার সন্ধেয় গোকুলপুরির টায়ার বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে প্রথম খবর আসে। তার পরে ভজনপুরা, মৌজপুর, জাফরাবাদ এলাকায় সংঘর্ষ বড় আকার নেয়। ভজনপুরাতে একটি পেট্রল পাম্পেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নামানো হয়েছে র‍্যাফ। রাজধানীর এই পরিস্থিতিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।

কিন্তু তাতে লাভ হওয়া দূরের কথা, আরও বেড়েছে অশান্তি। উত্তর-পূর্ব দিল্লির কারোয়াল নগর, মৌজপুর, ভজনপুরা, বিজয় পার্ক এবং যমুনা বিহার থেকে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে নতুন করে। সিএএ-র প্রতিবাদে জমায়েত হওয়া বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ভাঙতে বিজেপিই দিল্লি পুলিশকে পাঠিয়ে অশান্তি পাকাচ্ছে।বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তারাই হিংসা ছড়াচ্ছে। সোশ্য়াল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওয় হিংসার ছবি ক্রমে ছড়িয়ে পড়ছে।

মঙ্গলবার দুপুরে জল্পনা শোনা গেছিল, পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা নামানো হবে রাজধানীতে। কিন্তু সে জল্পনা খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারা জানিয়েছে, যথেষ্ট পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনা এখন নামানো হবে না।

দিল্লিতে শান্তি বজায় রাখার জন্য বাসিন্দাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন অমিত শাহ। কোনও রকম প্ররোচনামূলক মন্তব্য করা থেকেও সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ যাতে অন্য কোনও অসামাজিক কাজ না ঘটিয়ে বসে, সে জন্য উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানা ও দিল্লির সীমানার দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

এদিন সংঘর্ষের জেরে উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি সরকারের তরফে। জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরি, জোহরি এনক্লেভ এবং শিববিহারে মেট্রো পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসাত্মক ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকরাও। ফটো এবং ভিডিও ডিলিট করার জন্য সাংবাদিকদের বিক্ষোভকারীরা জোর করেছেন বলেও অভিযোগ। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন একাধিক সর্বভারতীয় মিডিয়ার সাংবাদিক।

দিল্লির অশান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটাই বললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অমিত শাহ। সিএএ–বিরোধী এবং সিএএ–সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে গত তিন ধরে অগ্নিগর্ভ উত্তরপূর্ব দিল্লি।
এক হেড কনস্টেবল সহ মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। জখম শতাধিক। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুমান করে রাজনৈতিক মতান্তর ভুলে মঙ্গলবার আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপির তথাকথিত ‘‌চাণক্য’‌, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

বৈঠক শেষে কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে , ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সদর্থক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, সব কটি রাজনৈতিক দলই দিল্লিতে শান্তি ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। ‌পুলিস কিছু কাজ করছে। আর অমুত শাহজি আশ্বাস দিয়েছেন, যেখানেই বাহিনীর দরকার হবে, সেই মতো তিনি তা পাঠাবেন।
সামরিক বাহিনী পাঠানো ইস্যুতে কেজরিওয়াল বলেন, তাঁর আশা তার প্রয়োজন হবে না। তবে হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে তাঁদের সহায়তা করবেন সেব্যাপারে আশাপ্রকাশ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সকালেই দিল্লির সীমানাগুলি সিল করার ব্যাপারে সওয়াল করেছিলেন কেজরিওয়াল।

Previous article৩০০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : বার্তা ট্রাস্পের
Next articleদিল্লির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী,শান্তি বজায় রাখতে বার্তা দিলেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here