দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ খড়্গপুর বিধানসভার উপ নির্বাচনে পুরোদস্তুর প্রচার শুরু করে দিলেন পরিবহণ ও সেচ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মিশ্র এই এলাকায় ভোট চাইতে কথা তাঁর মূলত দুটোই। এক, রেল বেসরকারিকরণ হচ্ছে, ভিআরএস দিয়ে দিচ্ছে বহু মানুষকে। রেল নগরী খড়্গপুরের গরিমাই সংকটে। এবং দুই, খড়্গপুরের প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ ঘোষ ছিলেন অকর্মণ্য। চার বছরে কোনও কাজই হয়নি সেখান।
রবিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে খড়্গপুরে প্রচার শুরু করে গোটা গোটা হিন্দিতে বলেন, গত বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন দিলীপ ঘোষ। ভোটের পর খড়্গপুরের মানুষ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন খড়্গপুরের উন্নয়নের দাবি নিয়ে। তিনি কী বলেন? দিলীপবাবু তাঁদের বলেন, রাজ্য সরকার আমাদের নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আমার কথা শুনে কাজ করবে না।
পরিবহণ মন্ত্রীর কথায়, সুতরাং এই উপ নির্বাচনে রাজ্যের সরকার পাল্টাবে না। তৃণমূল সরকারই থাকবে। দলের প্রার্থী প্রদীপ সরকার পুরসভায় কাজ করেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর পরেই শুভেন্দু বলেন, “অকর্মণ্য দিলীপ ঘোষকে চার বছর সময় দিয়েছেন। আমাদের এক বছর দিন। কারণ একুশের ভোটের আগে তার বেশি সময় নেই। ওপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন, নীচে প্রদীপ সরকার, আর গ্যারান্টি থাকবে শুভেন্দু অধিকারীর”।
দিলীপ ঘোষের কাজ নিয়ে সমালোচনা করলেও তাঁকে ব্যক্তি আক্রমণ করেননি তৃণমলের এই তরুণ নেতা। অযোধ্যা মামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য বা সরাসরি বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও তীক্ষ্ণ মন্তব্যও ছিল না তাঁর বক্তৃতায়। তবে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, দিলীপ ঘোষ খড়্গপুরে রেলের কোনও কাজ করাতেও ব্যর্থ হয়েছেন। দিল্লিতে বিজেপি-র সরকার চলছে। কিন্তু সেখান থেকে খড়্গপুরের জন্য কোনও প্রকল্প আদায় করে আনতে পারেননি রাজ্য বিজেপি সভাপতি। উল্টে খড়্গপুরে রেলের ডিআরএম অফিসেই স্বেচ্ছাঅবসর নিতে বাধ্য করানো হচ্ছে রেল কর্মীদের।
উনিশের লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর আসন থেকে জিতেছেন দিলীপবাবু। সেই কারণেই খড়্গপুর বিধানসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাই উপ নির্বাচন হচ্ছে সেখানে। লোকসভা ভোটে খড়্গপুর বিধানসভায় বিজেপি-র লিড ছিল কম বেশি ৪৫ হাজার ভোট। এর পরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দায়িত্ব শুভেন্দুকে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে ৪৫ হাজার ভোটের ব্যবধান কমিয়ে বিজেপি-কে হারানো ছোট চ্যালেঞ্জ নয়। তার উপর অযোধ্যা মামলার রায়ের পর খড়্গপুরে অবাঙালি হিন্দুরা তা কী ভাবে দেখবেন সেও প্রশ্ন। সেই কারণে প্রচারে স্থানীয় বিষয়আশয় তথা উন্নয়নের প্রশ্নটিকেই শুভেন্দু সামনে রেখেছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।