উন্নয়নের অজুহাতে মানুষ নিজেই ডেকে আনছে নিজের বিপদ ! এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সবচেয়ে আগে দরকার নিজেদের সচেতন হওয়ার।
দেশের সময় ,কলকাতা: বিশ্ব পরিবেশ দিবসে (World Environment Day) সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে মেট্রো স্টেশনের চার নাম্বার গেটের সামনে চৌঠা জুন রবিবার বিকেলে তিন দফা দাবি নিয়ে একদল গাছভূতেরা জড়ো হয়েছিল৷ পরিবেশ রক্ষায় নতুন করে নেওয়া হল শপথ। উদ্যোক্তা কলকাতার পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সংবেদন’।
গাছ ভুতেদের তিন দফা দাবি —
- শহরটাকে এসি করতে হবে
- গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে
- পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে হবে।
ওরা মানসিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ছাত্র-ছাত্রী ও দৃষ্টিহীন মানুষ ৷ তাঁরাই এদিন পুতুল ও পাপেট নিয়ে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন পথ সভায় সামাজিক বার্তা দিতে ৷
উষ্ণায়নের দাপটে এখন পাহাড়ের বুক থেকে গলছে বরফ (Ice Melting)। ক্রমশই পরিবেশকে গিলে খাচ্ছে কংক্রিটের জঙ্গল। উধাও হচ্ছে জঙ্গল, শুকিয়ে যাচ্ছে নদী।
হিমালয়ের কোলের শহর গুলোতেও এখন বিদ্যুৎ চালিত পাখার প্রয়োজন হয়ে উঠেছে ।কি হবে আগামী দিনে যদি এভাবেই গাছ কাটা হয় , জলাশয় বুঝিয়ে ফেলা হয় , প্লাস্টিকে পুরো শহর ঢেকে যায় — তাহলে হয়তো আমরা সবাই ওই শুকনো গাছের মতোই হয়ে যাবে একদিন।
উন্নয়নের অজুহাতে মানুষ নিজেই ডেকে আনছে নিজের বিপদ ! এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সবচেয়ে আগে দরকার নিজেদের সচেতন হওয়ার। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সেই সচেতনতার বার্তা দিতেই এগিয়ে এল কলকাতার পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সংবেদন’।
তেমন দিন যাতে আমাদের দেখতে না হয়, তার জন্য সংবেদনের ৫০ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রী দৃষ্টিহীন ভাই বোনেরা সমাজকে অভিনব পদ্ধতিতে এক পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিলেন।
শুকনো গাছের ডাল নিয়ে তারা গাছ ভূত সেজে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে একটি পথনাটিকা করলেন ” যদি বাঁচতে চাও ” ।
মুখাভিনয়টি পরিচালনা করেন সংবেদনের শিক্ষক মানিক দে ; পাপেট পরিকল্পনায় ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী দিলীপ মন্ডল ।
সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত সাধারণ মানুষের মধ্যে ১০০ টি চারাগাছ বিতরন করা হয় এদিন ৷কলকাতা পুলিশ ও শ্যামপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ওসির হাতে ফুলের চারা হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংবেদনের সভাপতি গোবিন্দ রায় ও সম্পাদক সমিত সাহা এবং আহ্বায়ক কল্যাণী মল্লিক সহ সংবেদনের সকল ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক শিক্ষক শিক্ষিকা এবং সদস্য বৃন্দ।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ আশীষ কুমার গাঙ্গুলী ও অভিষেক ঘটক ৷
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালে ‘স্টকহোম কনফারেন্স অন হিউম্যান এনভায়রনমেন্ট’-এ ৫ জুন দিনটিকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে প্রথম বার উদযাপন হয় ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস।’ স্লোগান ছিল, ‘ওনলি ওয়ান আর্থ।’ স্টকহোম কনফারেন্স থেকে ‘ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম’ বা UNEP নামে একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চও তৈরি করা হয়।