

এই প্রথম নতুন চ্যাম্পিয়ন পাওয়া যাবে মেয়েদের ওয়ান ডে বিশ্বকাপে। রবিবার মেগা ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দলেই রয়েছেন একাধিক ম্যাচ উইনার। ভারতের ভরসা স্মৃতি, হরমনপ্রীত, জেমাইমার ব্যাট। বল হাতে ভারতীয়দের ভরসা জোগাচ্ছেন দীপ্তি শর্মা, রেণুকা ঠাকুররা। কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে তৈরি দক্ষিণ আফ্রিকাও। তাদের বড় ভরসা ক্যাপ্টেন লরা উলভার্ট, নাদিন ডি ক্লার্ক। তরুণ ওপেনার তাসমিন ব্রিৎসের দিকেও থাকবে নজর। বল হাতে নজরে থাকবেন মারিজ়েন কাপ, আয়াবঙ্গা খাকারা। তাই ফাইনাল ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে কয়েকটি ডুয়েল।

নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে আজ যে মহারণ, তাতে ইতিহাসের ভারও কম নয়। আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫-এর ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। একদিকে ঘরের মাঠে দু’বারের ফাইনাল হার (২০০৫ ও ২০১৭)-এর ক্ষত ভুলে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্নে ভারত, অন্যদিকে প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা, যারা এ বারই ইতিহাস লিখছে।
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসে উজ্জীবিত হারমনপ্রীত কাউররা জানে, আর এক ধাপ দূরেই ইতিহাস। অন্যদিকে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিমধ্যেই একবার এই টুর্নামেন্টেই ভারতকে পরাজিত করেছে। অর্থাৎ, মুম্বইয়ে রবিবারের সন্ধ্যায় অপেক্ষা এক রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের।

ফাইনাল ম্যাচটি হবে সন্ধ্যায়, তাই শিশির ভেজা মাঠের ফ্যাক্টরই হয়ে উঠতে পারে বড় ভূমিকা। আগের ম্যাচগুলিতে দেখা গেছে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করা দলগুলো স্পষ্ট সুবিধা পেয়েছে। তাই টস জেতা মানেই বড় মানসিক সুবিধা।
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ পেসার মারিজানে কাপ তাঁর নিখুঁত লাইন-লেংথ ও লেট সুইং দিয়ে যে কোনও ব্যাটারকে বিপদে ফেলতে পারেন। অন্যদিকে মন্ধানা ভারতের ইনিংসের গতি নির্ধারণ করেন। কাপের প্রথম স্পেল সামলাতে পারলে ভারতীয় ইনিংস বড় রানের দিকে যাবে, তা বলাই বাহুল্য।

ভারতের মধ্য ওভারের ব্যাটিং মাঝে মাঝে ধীর হয়ে যায়। সেখানেই দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন জুটি এমলাবা (বাঁ হাতি) ও ট্রায়ন (অফ-স্পিন) আক্রমণ শানাবে। জেমাইমার কাজ হবে— উইকেট না হারিয়ে রান রোটেট করে যাওয়া। তাঁর ব্যাট যদি চলে, তবে ভারতকে থামানো মুশকিল।
ক্যাপ্টেন হারমনপ্রীতের উপর থাকবে বিপুল চাপ, বিশেষত প্রথম সারির উইকেট পড়ে গেলে। সুনে লুসের অফ-স্পিন তাঁর বড় পরীক্ষা নেবে। সঠিক সময়ে গিয়ার বদলে যদি হারমনপ্রীত আগ্রাসনে যান, তাহলে ভারতীয় ইনিংস পাবে সঠিক গতি।
সাম্প্রতিক ম্যাচে নাদিন ডি ক্লার্কের ৮৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস ভারতীয় বোলিংয়ের দুর্বলতা উন্মোচন করেছিল। তাই এবার দীপ্তি ও বাকি বোলারদের নজর থাকবে ডেথ ওভারে নিখুঁত ইয়র্কার ও ভ্যারিয়েশনে।

পরিসংখ্যান
ওডিআই হেড-টু-হেড: ভারত এগিয়ে ২০-১৩ (১টি বাতিল)
বিশ্বকাপ নকআউট হেড-টু-হেড: ১-১
টুর্নামেন্টে দুই দলের পথচলা
ভারত: গ্রুপ পর্বে চতুর্থ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৩৯ রান তাড়া করে ঐতিহাসিক জয়।
দক্ষিণ আফ্রিকা: গ্রুপ পর্বে তৃতীয়। ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে।

ঘরের মাঠ, অভিজ্ঞতা, ও জেমাইমা–হারমনপ্রীতের দুরন্ত ফর্ম ভারতকে সামান্য এগিয়ে রাখছে। দীপ্তি শর্মার স্পিন আক্রমণ দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্বল জায়গায় আঘাত হানতে পারে। তবুও দক্ষিণ আফ্রিকাকে খাটো করে দেখা ভুল হবে। লরা উলভার্টের ধারাবাহিক ফর্ম ও মারিজানে কাপের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স যে কোনও দলকে হারানোর মতো শক্তিশালী।



