দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ: নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই শীতের আমেজ বাংলা সহ অন্যান্য রাজ্যে। রাজ্যের কথা ধরলে, গত কয়েকদিনে অল্প করে পারদ পতন হচ্ছে বাংলায়। স্বাভাবিক ভাবেই শীতের আগেই শিরশিরানি ভাব শুরু সকাল এবং সন্ধের দিকে। বাকি সারাদিন রৌদ্রোজ্জ্বল পরিস্থিতি থাকলেও, দুই বেলার শিরশিরানি হাওয়া বুঝিয়ে দিচ্ছে শীতের আসার কথা।
উত্তর দিক থেকে ঢুকতে থাকা ঠান্ডা আর শুকনো বাতাসের দৌলতে নভেম্বরের দক্ষিণবঙ্গ রাতের তাপমাত্রার পতন দেখতেই অভ্যস্ত। একই সঙ্গে নভেম্বরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় আরও একটি প্যাটার্নকেও ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করেন আবহবিদরা। সেই প্যাটার্ন হলো সর্বনিম্ন তাপমাত্রার উত্থান–পতন। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, নভেম্বরে সাধারণত রাতের তাপমাত্রা কিছুদিন নামে, তার পর ফের পশ্চিমি ঝঞ্ঝার দৌলতে কয়েক ডিগ্রি বেড়ে যায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আকাশ পরিষ্কার হলে ফের শুরু হয় রাতের তাপমাত্রা কমার পালা। এ বছর নভেম্বরে সেই পরিচিত প্যাটার্ন এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। ফলে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু করে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত অব্যাহত রাতের তাপমাত্রা কমার পর্ব।
১২ নভেম্বর থেকে শুরু করে ১৮ নভেম্বর ভোররাত পর্যন্ত টানা এক সপ্তাহ সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পতনই উপভোগ করছেন দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দারা। সোমবার সকালে মৌসম ভবন জানিয়েছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উপরে ঠান্ডা বাতাস ঘণ্টায় প্রায় ১৭০ কিলোমিটার গতিবেগে উত্তর–পশ্চিম দিক থেকে ঢুকে উত্তরের সমভূমির উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এই বাতাস আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় ‘জেট স্ট্রিম’ নামে পরিচিত। শীতের সময়ে মধ্য এশিয়ার দিক থেকে ভারতে উত্তুরে হাওয়ার প্রবেশ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে এই জেট স্ট্রিম। এ বছর এখনও পর্যন্ত কোনও পশ্চিমি ঝঞ্ঝার বাধা আসেনি বলেই ঠান্ডা বাতাস অবাধে ঢুকছে ভারতে। তার প্রভাবেই সোমবার ভোররাতে দিল্লি রিজ এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ দিন দেশের সমতলে দিল্লি রিজই ছিল শীতলতম স্থান।
রাজধানীর শীতলতম হওয়ার দিনে ভারতের প্রাক্তন রাজধানী কলকাতাতেও পারাপতনের ধারা অব্যাহত রইল। এ দিন মরসুমে প্রথম বারের জন্য শহরে ভোররাতের তাপমাত্রা নেমে গেল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে—১৮.৮ ডিগ্রি। সল্টলেকে সর্বনিম্ন তামপাত্রা ছিল ১৯.২ ডিগ্রি। আলিপুর হাওয়া অফিসের রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই রাতের তাপমাত্রা ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নীচে নেমেছে। বাংলার সমতলে এ দিন শীতলতম ছিল পুরুলিয়া (১২.৭ ডিগ্রি)। রাজ্যের মধ্যে শীতলতম ছিল দার্জিলিং—৮.৪ ডিগ্রি।
তবে আবহবিদরা মনে করছেন, এই সপ্তাহের শেষ দিকে একটা পশ্চিমি ঝঞ্ঝা তৈরি হয়ে রাতের তাপমাত্রার এই অবাধ পতনে সাময়িক লাগাম পড়াতে পারে। তবে তার মেয়াদ দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুধু বাংলা নয়, শীতের আমেজ অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও। বাংলার পাশাপশি কুয়াশার চাদর সকাল সন্ধে ঢাকা দিচ্ছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, বিহারকে। কিন্তু এই শীতের মুখে ফের বৃষ্টিতে ভিজবে বেশকিছু জায়গা। আইএমডির পূর্বাভাস তেমনটাই। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, শীতের মুখে ফের বৃষ্টিতে ভেজার সম্ভাবনা তামিলনাড়ু, কেরলের বেশকিছু জায়গার।