দেশের সময়: পঞ্চায়েত ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে অশান্তির খবর আসছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। সম্প্রতি পর্যাপ্ত সেনাবাহিনী দিয়ে ভোট করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই মতো কমিশন ব্যবস্থাও নিয়েছে। যদিও বিক্ষিপ্ত অশান্তির অভিযোগ বন্ধ হয়নি।
উত্তর ২৪ পরগনায় দুই জায়গায় বিজেপি কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রথম ঘটনাটি বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ ব্লকের আমলানি গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিপুর দাসপাড়ায়। অভিযোগ বিজেপির প্রার্থী সঞ্চিতা ঋষি দাসের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয়েছে। সঞ্চিতা ১৭২ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী। শুক্রবার রাত দুটো নাগাদ দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ। একটি বোমা ফাটলেও অন্যটি ফাটেনি। বিজেপি প্রার্থীর দাবি সকালে পরিবারের সদস্যরা বাড়ির সামনে একটি ঝোপের মধ্যে তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখেন।
অন্যদিকে বিজেপি বুথ সভাপতির বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। ঘটনাস্থলে পোঁছায় বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক। যদিও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ব্লকের ধর্মপুকুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাইপুর গ্রামের ৬৮ নম্বর বুথের সভাপতি দিলীপ মজুমদারের বাড়ি লক্ষ্য করে গভীর রাতে বোমা মারার অভিযোগ ওঠে। সভাইপুর গ্রামের বিজেপির বুথ সভাপতি দিলীপ মজুমদারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েছিলেন। আচমকাই হঠাৎ বোমাবাজির শব্দ শুনতে পান। বোমার শব্দেই ঘুম ভাঙে তাঁদের। প্রথমটায় তিনি ঘর থেকে বের হননি। পরে বোমাবাজি থেমে গেলে, পরিস্থিতি একটু থীতু হলে তিনি ঘর থেকে বের হন। তাঁর দাবি, বাইরে তখনও ধোঁয়া ছিল। বাড়ির সামনে পড়েছিল বোমার স্প্লিন্টারগুলো। বিজেপির নেতার অভিযোগ, তখনও বাড়ির পিছনে একটা তাজা বোমা পড়ে ছিল।
তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই বোম মেরেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বনগাঁ থানার পুলিশ। এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। পৌঁছন বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। এই বিষয়ে বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়কের দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। গণতান্ত্রিক ভাবে মোকাবেলা করা হবে
এই বিষয়ে ফোনে বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “ওই বুথে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে। সেই কারণে বিজেপি নিজেরাই বোম মেরে সমবেদনা নেওয়ার চেষ্টা করছে । আমরা পুলিশকে সঠিক তদন্ত করবার জন্য বলেছি । যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের গ্রেফতার করবার জন্য বলেছি।”
এই দুটি ঘটনাতেই বিজেপির অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুই বিজেপি কর্মীরই দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই বোমাবাজি চালিয়েছে। ভোটের আগে এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে শাসক দল। তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনভাবেই জড়িত নয়। বিরোধীরা কুৎসা রটানোর জন্য নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়ে তৃণমূল উপর দায় চাপাচ্ছে।
অন্যদিকে, অশোকনগরের বাঁশপুল পঞ্চায়েতের পুটিয়া বাজার এলাকায় তৃণমূলের বেশ কিছু ফ্লেক্স ছিঁড়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের কেউ করে থাকতে পারে বলে অনুমান তৃণমূল নেতৃত্বের। শুক্রবার সকালে বড় বড় ফ্লেক্স ছিঁড়ে মাটিতে লুটোপুটি খেতে দেখা যায়। ঘটনার খবর পেয়ে অশোকনগর থানার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূল নেতারা। পরে ফ্লেক্স ছেঁড়ার প্রতিবাদে তৃণমূল প্রতিবাদ মিছিল করে এলাকায়।