Weather Update গরমের ভ্রুকুটি ! উষ্ণতায় নজির দিল্লির , মার্চের শুরুতেই আবহাওয়ায় বড় বদল হতে চলেছে

0
16
হীয়া রায় , দেশের সময়

ফেব্রুয়ারির শেষে আবহাওয়ায় বড় রদবদল হতে চলেছে রাজ্যে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে দক্ষিণবঙ্গ থাকবে শুষ্ক।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার অবধি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ারে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে বজ্রপাতের সঙ্গে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। শনিবার দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায় রয়েছে তুষারপাতের সম্ভাবনা। সিকিমে তুষারপাতের প্রভাব দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায় পড়বে। শুক্রবার তুষারপাতের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। শনিবারের পর তাপমাত্রা বাড়বে উত্তরেও। 

তবে দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। মার্চের শুরুতেই কলকাতা সহ দক্ষিণের সব জেলাতেই বাড়বে গরম। শুধু উপকূল ও গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতে সকালের দিকে হালকা কুয়াশার সম্ভাবনা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ হবে পরিস্কার।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মার্চের শুরু থেকেই দক্ষিণে বাড়বে গরম। প্রথম সপ্তাহেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। ইতিমধ্যেই কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রির কাছাকাছি। 

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজস্থানের উপরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত ও মার্চের শুরুতে নতুন পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণেই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 

আর দক্ষিণে মার্চের শুরুতেই তাপমাত্রা ৩৩–৩৪ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। শুক্রবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২.২ ডিগ্রি।

 ফেব্রুয়ারির শেষেই কি পরের কয়েক মাসের আভাস পেয়ে গেল দেশের রাজধানী দিল্লি ? বুধবার দুপুরে দিল্লির সফদরজঙ্গ ওয়েদার স্টেশনের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা ছিল ওই ওয়েদার স্টেশনে এই মরশুমে উষ্ণতম এবং গত ১৯ বছরের মধ্যে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় উষ্ণতম। মৌসম ভবনের রেকর্ড বলছে, বুধবার দিল্লির এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬.৪ ডিগ্রি উপরে ছিল। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই সেখানকার রাতের তাপমাত্রা পৌঁছয় ১৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, ১৯৫১ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ৭৪ বছরে ফেব্রুয়ারিতে সফদরজঙ্গ ওয়েদার স্টেশনে রাতের তাপমাত্রা কখনও এত বেশি হয়নি।
দিল্লির ঘটনাকে ‘ব্যতিক্রমী’ বলা যাবে না। প্রায় ১৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণে মুম্বইয়েও একই পরিস্থিতি। বুধবার দুপুরে মুম্বইয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কোথাও কোথাও পৌঁছে গিয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সে‍লসিয়াসে। স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি উপরে। প্রায় তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতির জন্যে মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় আবহাওয়া দপ্তর হলুদ সতর্কতাও জারি করে।

২০২৪–এর বড়দিন ছিল কলকাতায় দশকের উষ্ণতম বড়দিন। তার কয়েক দিন পরে ইংরেজি নতুন বছরেও মনে রাখার মতো ঠান্ডা অনুভূত হয়নি। ফেব্রুয়ারি পড়তে না পড়তেই কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে পাখা চা‍লানোর পর্ব। কোনও কোনও বাড়িতে এসিও চলতে শুরু করেছে।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট বলছে, ফেব্রুয়ারি পড়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে ছ’দিন। এর মধ্যে দু’দিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩১ ডিগ্রি (৩০.৮ ডিগ্রি) হয়ে গিয়েছিল। অসমের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে তেলঙ্গানা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা এবং একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে তৈরি একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের মিলিত প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় টানা তিন দিন কমবেশি বৃষ্টিও হয়েছিল। এর মধ্যে একদিন কলকাতা ৪৭.৭ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি পেয়েছে। এমনটা না হলে হয়তো কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়ে যেত।

দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ এবং একই সঙ্গে পূর্ব দিকে ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই প্রকৃতিদেবীর এমন চোখ রাঙানো আগামী কয়েক মাস কী হতে চলেছে তারই ট্রেলার বলে মনে করছেন আবহবিদদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা এখন স্বাভাবিকের চেয়ে কম। অর্থাৎ সেখানে ‘লা নিনা’ পরিস্থিতি চলছে। এই অবস্থায় সাধারণত দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে। কিন্তু এ বার ‘লা নিনা’ এতটাই দুর্বল হয়ে রয়েছে যে আবহাওয়ার উপরে তার কোনও প্রভাবই পড়ছে না।’

এই কারণেই সামনের কয়েক দিনের মধ্যে গোটা দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রায় বড় রকমের পরিবর্তনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহবিদরা মনে করছেন, মার্চের প্রথম সপ্তাহের শেষ থেকেই কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গে দিনের তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যেতে পারে। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার মতো রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে রাতের দিকে এখনও কিছুটা হিমেল অনুভূতি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু দিন দশেক পর আর সেই পরিস্থিতি থাকবে বলে মনে করছেন না আবহবিদরা।

তার পর? এক বছর আগেই এপ্রিল ও মে মাস মিলে রাজ্যের দক্ষিণে টানা ২২ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল। দার্জিলিংয়ের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ির তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর পার করেছিল। ফেব্রুয়ারির পরিস্থিতি হয়তো ফের ওই ভয়াবহ দিনগুলিরই সতর্কবার্তা দিচ্ছে।

Previous articleNew Student Party in Bangladesh আজ ইউনুস অনুগামী ছাত্ররা নতুন দল ঘোষণার পথে, পার্টিতে ভাঙন রুখতে ঐক্যের ডাক খালেদার
Next articleনা ফেরার দেশে অভিনেতা উত্তম মোহান্তি ,ফের শোকের ছায়া বিনোদন জগতে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here