দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় ফের বাধা পাচ্ছে উত্তুরে হাওয়া। দুর্বল হতে শুরু করেছে। ফলে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি কম। হাওয়া অফিসের মতে, আগামী কয়েক দিন ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলায়।
দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বহাল রয়েছে শীতের আমেজ। গঙ্গাসাগর মেলা পর্যন্ত শীতের এই ইনিংস জারি থাকবে। মকর সংক্রান্তিতে আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বর্তমানে তাপমাত্রার পারদ ১৫ ডিগ্রির বেশি বাড়বে না। ফলে গোটা জানুয়ারি মাস জুড়েই শীতের আমেজ উপভোগ করতে পারবেন রাজ্যবাসী।
মঙ্গলবার সকাল থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল কলকাতা ও জেলায় একাধিক এলাকা। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ উঠবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
আগামী ৪৮ ঘণ্টা উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে শীত বহাল থাকবে। কলকাতার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির মধ্যেই থাকবে। সোমবার কলকাতায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশার দাপট। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিংপং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এ ঘন কুয়াশা থাকবে। দুই দিনাজপুর ও মালদাতে ঘন কুয়াশার দাপট বজায় থাকবে।
আসানসোল- ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বহরমপুর- ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বাঁকুড়া- ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বিষ্ণুপুর- ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বর্ধমান- ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস
কোচবিহার- ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস
দার্জিলিং- ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
ডায়মন্ড হারবার- ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
দিঘা- ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
জলপাইগুড়ি- ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
কালিম্পং- ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস
দমদম- ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
হাওড়া- ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
অফিস সূত্রে খবর, উত্তর–পশ্চিম ভারতে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। দুর্বল হয়েছে উত্তুরে হাওয়া। এছাড়া বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ বাতাস এই রাজ্যে প্রবেশ করছে। আর তাই আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বেশ কয়েক ডিগ্রি। সপ্তাহের শেষে জাঁকিয়ে শীত পড়ায় সম্ভাবনা প্রায় নেই।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে উত্তর ভারত। তবে এখন এর থেকে স্বস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে শুরু করেছে। আবহাওয়া বিভাগ অর্থাৎ আইএমডি অনুসারে, ২৪ ঘন্টা পরে উত্তর পশ্চিম ভারতের বেশিরভাগ এলাকা থেকে শৈত্যপ্রবাহের প্রকোপ হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে শীতের দাপট দেশের বেশ কিছু জায়গা থেকে হাল্কা কমতেই কোথাও ঘন কুয়াশা আবার কোথাও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি হয়েছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশের অনেক জায়গায় ঘন থেকে অতি ঘন কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পশ্চিম ভারতের অনেক অংশ এবং মধ্যপ্রদেশের উত্তরাঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
আইএমডি অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মধ্য, পশ্চিম এবং পার্শ্ববর্তী উত্তর উপদ্বীপের বেশিরভাগ অংশে তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে।
আইএমডি আবহাওয়া বুলেটিনে বলেছে যে একটি পশ্চিমী ঝঞ্জা তৈরি হয়েছে। এটি ১০ জানুয়ারি রাত থেকে পশ্চিম হিমালয় অঞ্চল এবং ১১ জানুয়ারি থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারতের সমভূমিতে প্রভাব ফেলতে পারে। যার কারণে অনেক জায়গায় বৃষ্টি ও তুষারপাত হতে পারে।
পশ্চিমী ঝঞ্জার কারণে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টি এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসম বিভাগ জানিয়েছে, একই সময়ে পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং পার্শ্ববর্তী পশ্চিম উত্তর প্রদেশের এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১২ জানুয়ারি জম্মু-কাশ্মীর এবং হিমাচল প্রদেশের কিছু জায়গায় বজ্রপাতের সঙ্গে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী দুই দিনের মধ্যে পূর্ব ও মধ্য ভারতের অনেক অংশে ন্যূনতম তাপমাত্রায় কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর পর পর্যায়ক্রমে দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। গাঙ্গেয় সমভূমির কাছাকাছি হালকা বাতাস এবং উচ্চ আর্দ্রতার জেরে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের অনেক জায়গায় ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে।