দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কাল ছিল দোল আর আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে হোলি উৎসব।
উষ্ণতম দোলের সাক্ষী থাকল বাংলা। বুধবারও কলকাতা সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই পারদ থাকবে ঊর্ধ্বমুখী। ফলে গলদঘর্ম অবস্থা হবে হোলিতেও । কিন্তু, উৎসব মিটতে না মিটতেই প্রখর এই দাবদাহ থেকে সাময়িক স্বস্তি মিলবে বঙ্গবাসীর। বৃহস্পতিবার থেকেই জেলায় জেলায় রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস । যদিও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রাজ্যে লু বইবার সম্ভাবনা।
(IMD )আই এমডি-এর পূর্বাভাস অনুযায়ি দেশের কিছু রাজ্যে হোলির মেজাজ থাকলেও আবহাওয়ার মুড খারাপ৷ আজ মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানের কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। ঝাড়খণ্ডেও আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে সেখানেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের হাওয়া বদলের সম্ভাবনা। পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ৯ মার্চ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি শুক্রবারে বৃষ্টি হতে পারে বীরভূমেও। ফলে তাপমাত্রা জনিত অস্বস্তি থেকে খানিকটা হলেও স্বস্তি পাবে রাজ্যবাসী। তবে কেবলমাত্র দক্ষিণবঙ্গই নয়, উত্তরবঙ্গেও দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা।
কলকাতা শহরে আপাতত বৃষ্টিপাতের তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৩৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা স্বাভাবিকের থেকে এখ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ২৭ থেকে ৮৬ শতাংশ।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এটাই ছিল সাম্প্রতিক অতীতের উষ্ণতম ফেব্রুয়ারি। চলতি মরশুমে মার্চেও তাপমাত্রার পারদ রেকর্ড ভাঙবে। পশ্চিম ভারতের যেভাবে লু চলে সেভাবেই শুষ্ক ও উষ্ণ হাওয়া বইবে রাজ্যের একাধিক জেলায়। ১১ মার্চের পর দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়বে।
প্রসঙ্গত, IMD সূত্রে খবর, দেশের প্রায় সমস্ত রাজ্যেই মার্চে তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের উপরে। উত্তর পশ্চিম ভারতের একাধিক রাজ্য়ে গরম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে খরার সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করছেন আবহাওয়াবিদদের একাংশ ( West Bengal Weather Update)। মার্চেই তাপপ্রবাহের ইঙ্গিত দিচ্ছেন তাঁরা।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই সকালের দিকে আকাশ হালকা কুয়াশাছন্ন (Fog) থাকলেও, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রোদের তেজ। গলদঘর্ম অবস্থা হচ্ছে শহরবাসীর। এই পরিস্থিতি আরও অস্বস্তিকর হবে মার্চের মাঝামাঝি। বসন্তের মৃদু বাতাস নয় বরং গরম হাওয়ার দাপট দেখা যাবে রাজ্যজুড়ে ।
আবহাওয়া সংস্থা স্কাইমেট ওয়েদারের আপডেট অনুসারে, ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্বেন্স বা পশ্চিম ঝঞ্ঝার প্রভাবে পশ্চিম হিমালয় সংলগ্ন এলাকাকে প্রভাবিত করতে পারে। একটি ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ রাজস্থান এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রভাব বিস্তার করবে। উত্তর গোয়া থেকে ছত্তিশগড়ের দিকে ছুটে চলেছে । আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, পশ্চিম হিমালয়ের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি হতে পারে।
পশ্চিম হিমালয় এবং সিকিমের কিছু অংশেও তুষারপাত হতে পারে। রাজস্থান, পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ, বিদর্ভ, ছত্তিশগড় এবং পূর্ব মধ্যপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে এক বা দুই জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ও বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে। তামিলনাড়ুর কিছু জায়গাতেও হালকা বৃষ্টি হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় অসম, মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশের কিছু অংশে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের বিচ্ছিন্ন অংশ, পূর্ব মধ্যপ্রদেশ, হিমালয় পাদদেশ সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে বৃষ্টি ও বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি দেখা গেছে। গুজরাত ও রাজস্থানেও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি দেখা গেছে।
মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে প্রবল ঝোড়ো বাতাস বইবে সঙ্গে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দিল্লির আকাশেও এদিন মেঘ-রোদের খেলা থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে। হোলি উপলক্ষ্যে কোটা, জয়পুরের কিছু অংশ, আহমেদাবাদ, পুনে, নাসিক, নাগপুর, ভোপাল এবং ইন্দোরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
হিমাচল প্রদেশ, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের কিছু জায়গায় এবং পূর্ব মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত অঞ্চল এবং কোঙ্কন ও গোয়ার এক বা দুই জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বা তার বেশি। মৌসম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৫ দিনে দেশের আবহাওয়ার বিশেষ কোনও পার্থক্য থাকবে না। মধ্য ভারত, মহারাষ্ট্র ও গুজরাত ছাড়াও সমগ্র দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার কোনো হ্রাস বা বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনা নেই।
উত্তরপ্রদেশেও আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। লখনউ, কানপুর, প্রয়াগরাজ, গাজিয়াবাদ সহ কয়েকটি জেলায় শক্তিশালী থেকে মাঝারি গতিতে ঝোড়ো বাতাসে নাকাল হবে জীবন৷ এই পরিস্থিতি জারি থাকবে আগামী ২ দিন। লখনউতে অবস্থিত জোনাল মেটিওরোলজিক্যাল সেন্টার কানপুরে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশেও বজ্র-বিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টি হতে পারে। রাজ্যের কয়েকটি জেলায় শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী দু’দিন মধ্যপ্রদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে পশ্চিম মধ্যপ্রদেশে বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি রয়েছে। আজ থেকে আবহাওয়া পূর্ব মধ্যপ্রদেশেও বদলাবে এমনকি শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।