কলকাতা : নতুন বছর সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে শীতের আমেজ। উত্তর থেকে দক্ষিণ, বাংলাযর সব প্রান্তেই কাঁপুনি দিয়ে শুরু হচ্ছে দিন, মোটা মোটা শীতপোশাক ও লেপকাঁথা বেরিয়ে পড়েছে আলমারি থেকে। শুক্রবারও পারা পতন অব্যাহত।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর, দক্ষিণবঙ্গে শীতের সর্বোচ্চ স্পেল চলছে। আজ ও আগামীকাল, শনিবার পর্যন্ত তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে থাকবে। তবে রবিবার থেকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে।
আজ কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৫৮ থেকে ৯৬ শতাংশ।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকবে ৪ জানুয়ারি। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে অবস্থান করছে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত। এসবের জেরে শীতের এই পর্ব চলবে শনিবার পর্যন্ত। সপ্তাহান্তে আবহাওয়া বদলের সম্ভাবনা। ফের বাড়বে উষ্ণতা। রবিবার থেকে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। সোম, মঙ্গলবার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সকালে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৩.২ ডিগ্রিতে। পশ্চিমের জেলাগুলোর তাপমাত্রা পৌঁছেছে ১০ ডিগ্রির নিচে।
মঙ্গলবার, ৭ই জানুয়ারি হালকা তুষারপাতের সম্ভাবনা থাকছে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকায়। সিকিমে ব্যাপক তুষারপাতের সম্ভাবনা। সোমবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে। বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে কোথাও কোথাও। থাকবে কুয়াশার দাপটও।
ঠান্ডার কামড় আরও বাড়িয়ে সোমবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, এবং আলিপুরদুয়ারে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজ্যের বাইরে হিমাচলপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, এবং উত্তরপূর্ব ভারতের সিকিম, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা সহ কয়েকটি রাজ্যে ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিহারে চরম শীতল পরিস্থিতি এবং অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, এবং ত্রিপুরায় গ্রাউন্ড ফ্রস্টের সম্ভাবনা রয়েছে।
বঙ্গে এখনও সেভাব শীত না এলেও, উত্তর ভারত একপ্রকার জুবুথুবু প্রবল শৈত্য প্রবাহের সামনে। জানুয়ারির ৩ তারিখ, অর্থাৎ বছরের প্রথম সপ্তাহের পরিস্থিতি তেমনটাই।
গত কয়েকদিনের মতো শুক্রবারও শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত দিল্লিতে। সঙ্গে ঘন কুয়াশা। পরিস্থিতি বিচারে দিল্লি বিমানবন্দর দিনভর বিমান উড়ানে বিলম্বের বিষয়ে একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে সকালেই। সমস্ত যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্পাইসজেট সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, দিল্লির আবহাওয়ার কারণে, এদিন যাওয়া এবং আসার সমস্ত বিমানের সময়সূচিতে পরিবর্তন হতে পারে। শুধু দিল্লি নয়, উত্তর ভারতের একাধিক জায়গায় ঘন কুয়াশার আস্তরণ, সেটাও উড়ানে বড় বিষয়। এদিন সকাল আটতায়, দিল্লির পালাম বিমান বন্দরে দৃশ্যমানতা ছিল শূন্য। সফদরজঙ্গ বিমানবন্দরে ৫০ মিটার দৃশ্যমানতা ছিল। একই সঙ্গে চিন্তা বাড়াচ্ছে দিল্লির বাতাসের গুণগত মানও।
তবে শুধু বিমান নয়, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দিল্লিতে ট্রেন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে। ট্রেন চলছে বেশ কিছুটা দেরিতে। এদিন সকালে অন্তত ২৪টি ট্রেন দেরিতে চলছে।
আবহাওয়া দপ্তর আগেই জানিয়েছে, দিল্লিতে এই তীব্র শৈত্য প্রবাহ চলবে আরও কিছু দিন। ৬ তারিখ পর্যন্ত ঘন থেকে অতিঘন কুয়াশা ঘিরে রাখবে রাজধানীকে। গত ২৪ ঘন্টায় দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৬ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে বলে জানানো হয়েছে। শুধু দিল্লি নয়, ঘন কুয়াশা, তীব্র শৈত্য প্রবাহ দিল্লি, লখনউ, বেঙ্গালুরু, অমৃতসরেও।