

শক্তি বাড়িয়ে সাগরে ফুঁসছে নিম্নচাপ।বঙ্গোপসাগরে মঙ্গলবার সকালে ওডিশার উত্তর উপকূলের কাছে সমুদ্রের উপর তৈরি নিম্নচাপটি বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল।আর কয়েক ঘণ্টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এটি। এর জেরে মাসের শেষে বাংলা জুড়ে চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গোটা রাজ্যেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির দাপট বেশি থাকবে। এর মাঝেই মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বুধবার আলিপুর হাওয়া অফিস কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করেছে। উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলাতেও জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের বাকি ছ’টি এবং উত্তরের পাঁচটি জেলার প্রায় সবগুলিতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও সঙ্গে দমকা হাওয়ার হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায়। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা রয়েছে।
আগামিকাল, শুক্রবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে হলুদ সর্তকতা। আগামী সাতদিন দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ৩১ মে, শনিবার পর্যন্ত উত্তাল থাকবে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

আজ জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা এবং দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা রয়েছে। আগামিকাল শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ারে অতি প্রবল বৃষ্টির লাল সতর্কতা রয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহারে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। বাকি জেলায় ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা রয়েছে। শনিবার উত্তরবঙ্গের উপরের পাঁচ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। রবিবারেও উত্তরবঙ্গ জুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপের দৌলতে দেশের পূর্ব দিকে যখন বড় রকমের দুর্যোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই সময়ে দেশের পশ্চিম উপকূলের অবস্থাও প্রায় একই রকম থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কয়েক দিন আগেও আরব সাগরের যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা খুব বেশি ছিল।

কিন্তু বুধবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় তৈরি নিয়ে কোনও পূর্বাভাস দেয়নি মৌসম ভবন। ইতিমধ্যেই দেশের পশ্চিম উপকূলে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সামনের কয়েক দিন কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে বৃষ্টির প্রাবল্য জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানের পুরোনো আপ্তবাক্য অনুযায়ী, বর্ষা নেমে গেলে আর ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থাকে না। এ বার পশ্চিম উপকূলে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে বর্ষা নেমে যাওয়ার জন্যেই হয়তো ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা কমেছে।