দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আসন্ন চার পুরসভার ভোটে কড়া অবস্থান নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট করার লক্ষ্যে শুক্রবার নতুন নির্দেশিকা জারি করল তারা। মঙ্গলবার কমিশনের তরফে ওই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, চার পুরসভা এলাকার পুলিশ কমিশনার ও জেলাশাসক এবং সমস্ত পর্যবেক্ষকরা। এমনকি কেউ এই নির্দেশ না মানলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কমিশন।
কলকাতা পুরসভার ভোটে অশান্তির অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। আদালতের নির্দেশের পরেও অনেক ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক মতো ব্যবহার হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। ওই সমস্ত অভিযোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিল কমিশন। নতুন নির্দেশিকাও কমিশন জানিয়েছে, ভোটারদের মনোবল বাড়াতে পুলিশকে এলাকা ঘুরে ঘুরে রুট মার্চ করতে হবে। এলাকায় বেআইনি অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে গতি আনতে হবে পুলিশকে। একই সঙ্গে কমিশন আরও জানিয়েছে, নিবার্চন প্রক্রিয়া চলাকালীন নির্মিয়মান ভবন, প্রেক্ষাগৃহ, হোটেল, গেস্ট হাউস ও স্টেডিয়ামে বহিরাগত যাতে আশ্রয় না নেয় পুলিশকে তা নজরদারি করতে হবে। সীমান্ত এলাকায় ঠিক মতো যানবাহন চেকিং করতে হবে।
পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবহার নিয়েও নির্দেশে নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছে কমিশন। নির্দেশ, সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও ভাবেই ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে না। এমনকি জোর করে কেউ বুথের মধ্যে ক্যামেরা খুলে না রাখেন তা-ও নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশ্চিত করতে হবে। কমিশন জানিয়েছে, ভোটারদের হুমকি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। কোনও রাজনৈতিক দলের ক্যাম্প থেকে ভোটারদের ভয় বা ভোটদানে বাধা দিলে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রসঙ্গত, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রয়েছে আসানসোল, শিলিগুড়ি বিধাননগর ও চন্দননগর পুরসভার ভোট।
এদিন কমিশন যে যে নির্দেশিকা জারি করেছে তা দেখুন একনজরে:
ভোটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এরিয়া ডমিনেশন ও রুটমার্চ চলবে।
নির্মীয়মাণ বাড়ি, কমিউনিটি হল, লজ, হোটেল, গেস্ট হাউস, স্টেডিয়ামে ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, বিকেল পাঁচটা থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। যাতে কোনও সমাজবিরোধী আশ্রয় না নিতে পারে সে কারণেই এই ব্যবস্থা। তা ভোট পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে প্রশাসনকে।
সমস্ত সীমান্ত এলাকায় গাড়িতে নাকা চেকিং চলবে।
প্রয়োজন হলে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পরিচয় যাচাই করবে প্রশাসন।
সমস্ত বেআইনি অস্ত্র ও মদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
অতীতে ভোট হিংসা বা সাম্প্রদায়িক হিংসায় অভিযুক্ত কেউ যদি জামিনে বাইরে থাকেন এবং তাঁর কাছে যদি লাইসেন্সপ্রাপ্ত
আগ্নেয়াস্ত্র থাকে তাহলে তা প্রশাসন নিজেদের হেফাজতে রাখবে।
ভোটের একদিন আগে এলাকার দাগী অপরাধীদের আটক করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ ও কুইক রেসপন্স টিম সজাগ থেকে কাজ করবে।
ভোটের আগেরদিন পোলিং পার্টি পৌঁছনোর আগেই সেখানে পৌঁছে যেতে সশস্ত্র পুলিশকে। বুথ প্রহরার দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র পুলিশকে বুথ দখল, রিগিং রুখতে হবে।
যে মানুষ বুথে এসে ভোট দিতে চাইবেন তাঁরা যাতে নির্বিঘ্নে তা করতে পারেন তা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।
ভোটের দিন যদি কোনও প্রার্থী বা পার্টির লোকজন অনুমতিহীন গাড়ি নিয়ে ঘোরেন তাহলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। বাইক মিছিল নিষিদ্ধ।
ভোটের দিন সমস্ত রাজনৈতিক দলের ক্যাম্পগুলিতে চলবে কড়া নজরদারি। সেখান থেকে যাতে ভোতারদের ভয় দেখানো বা তাঁদের উপর প্রভাব খাটানো না হয়।
সমস্ত বুথে থাকবে সিসিটিভি।
ভোটের দিন সমস্ত রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।