অর্পিতা বনিক : ঋতু বদলের চরাচরে শিমুল-পলাশের রাঙা হাসি, বাতাসে ফিসফাস; রবি ঠাকুর যে বলে গেছেন, ‘আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো’।
প্রকৃতিতে আজ কোকিল গান ধরেছে। হাওয়ায় লেগেছে ফাগুনের আগুন। মর্মে জেগেছে দোলা। প্রকৃতির এ অপরূপ আবাহন জানান দিচ্ছে, ঋতুচক্রে বছর ঘুরে আবার এসেছে বসন্ত। কলকাতার রাস্তায় আজ হয়তো রক্তিম পলাশের শোভা নেই। কোকিলের গান হয়তো হারিয়ে গেছে অজস্র যানবাহনের বিকট হর্নের শব্দে ৷ তাতে কী, বসন্ত যে আজ সত্যিই দুয়ারে দাঁড়িয়ে। শুধু তাই নয়, আজ ভালোবাসার দিনও। তাইতো বসন্ত আর ভালোবাসার মহামিলন মন্ত্রে মত্ত ফাল্গুনের প্রথম দিন।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে প্রকৃতিতে এসেছে ঋতুরাজ বসন্তও। অর্থাৎ পহেলা ফাল্গুন আর ভ্যালেনটাইন্স ডে একই দিনে। প্রকৃতিতে লেগেছে রঙের ছোঁয়া। দিনটি উদ্যাপনে দেশে জুড়ে ছিল নানা আয়োজন।
পয়লা ফাল্গুন কিংবা বসন্ত যে নামেই ডাকা হোক না কেন, ভালোবাসার উষ্ণতা নিয়েই আজ বসন্ত এসেছে কোটি কোটি হৃদয়ের আঙিনায়।
১৪ ফেব্রুয়ারি। ভালোবাসা দিবস। সেই সঙ্গে আজ ১ ফাল্গুন, ১৪২৯ বাংলা। পহেলা বসন্ত প্রতিবছর খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জির ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে পালন করা হতো। কিন্তু ১৪২৬ বঙ্গাব্দ থেকে বাংলা ফাল্গুন মাসের প্রথম সেই দিনটি চলে আসে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে।
অন্যদিকে প্রতি বছর ৭ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় প্রেমের সপ্তাহ। তার মধ্যে সবচেয়ে বিশেষ দিনটি হলো ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন্স ডে। বছরের এ বিশেষ দিনে প্রিয়জনকে চমকে দেয়ার জোয়ারে গা ভাসান অনেকেই। নিজেকে সাজাতে ফুল ও পোশাকের দোকানে থাকে উৎসবপ্রেমীদের ভিড়।
ঋতুচক্রের পালাবদলে সবার শেষে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। শীতের রুক্ষতা ঝেড়ে নতুন রূপে আবির্ভূত হয় প্রকৃতি। গাছে গাছে ফোটে ফুল, উঁকি দেয় সবুজ পাতা। পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিল কুহু কুহু সুর গান ধরে। প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষের মনেও জাগে আনন্দের জোয়ার। প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাসন্তী রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবি গায়ে জড়িয়ে ভালোবাসা বিনিময়ে মাতোয়ারা হন প্রেমিক-প্রেমিকারা। পয়লা ফাল্গুনের সঙ্গে ভালোবাসা দিবস যোগ হওয়ায় এ দিনটি দোলা দিয়ে গেল সব বয়সী মানুষের প্রাণে।
ভার্চুয়াল দুনিয়াতেও লেগেছে বসন্ত আর ভালোবাসার ছোঁয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে চলছে ভালবাস ও বসন্তের শুভেচ্ছা বিনিময়। রেস্টুরেন্ট, খাবারের দোকান ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো সেজেছে উঠেছিল নিজস্ব ঢঙে।