এক কথায় বীভৎস। এক হাড় কাঁপানো নারকীয় দৃশ্য। একটি অসহায় বালককে এক ব্যক্তি বেত দিয়ে বেদম পেটাচ্ছে। তার সাথে অবিরত চর থাপ্পড়। কখনো কখনো ওই ব্যক্তি তাকে আছড়ে শক্ত মেঝেতে ফেলে দিচ্ছে। বালকটি বেত হাতে ব্যক্তিটিকে আপ্রাণ কাকুতি মিনতি করছে ‘ গুরুজী ‘ বলে সম্বোধন করে। সে বলছে, ” আমাকে আর মারবেন না গুরু জি। আমাকে ছেড়ে দিন। ” কাকস্য পরিবেদনা। নির্মম প্রহারে কোনো খামতি নেই। প্রায় দু মিনিট বারো সেকেন্ডের এই ভিডিও টি এখন রীতি মত ভাইরাল। যদিও এই ভিডিও এর সত্যতা যাচাই করে নি দেশের সময় অনলাইন ।
সাধারণ ভাবে ভিডিও টি থেকে পরিস্কার এটি উত্তর ভারতের কোনো আশ্রমের ভিডিও। যেখানে আশ্রমিক হিসাবে রয়েছে নাবালকরা। তারা পড়াশোনার জন্যই যে সেখানে রয়েছে তা ওই কিশোরের বেত হাতে ব্যক্তিকে গুরু জী সম্বোধন থেকেই পরিষ্কার। গুরু কুলের কোনো নিয়ম ভাঙার কিছু “অভিযোগ” রয়েছে ওই বালকের বিরুদ্ধে। তার জন্য “বিচার সভা ” বসেছে। বিচারক ‘গুরুজী’। সেই – ই নির্বিচারে আশ্রমের অন্দরে থার্ড ডিগ্রী প্রয়োগ করছে। প্রথমে সেই বালকের পরিধেয় ধুতিটি টান মেরে খুলে দেয় গুরুজী। ছেলেটি তার ভিতর পরেছিল একটি হাফ প্যান্ট।
তাকে প্রথমে গুরুজী প্রশ্ন করে’ তুই কি করেছিস। ” তাকে সেভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই শুরু হয় চর থাপ্পড় মারা। এর পর বেত দিয়ে প্রহার। যন্ত্রণায় অঝোর ধারায় কাঁদছে বালক। তাতে মায়ার উদ্রেক হয় নি গুরুজীর। বরং মার আরো বেড়ে যায়। এমনকি তাকে পাঁজাকোলা করে তুলে আশ্রমের মেঝেতে আছড়ে ফেলা হয়। এর পর একটির জায়গায় তিনটি বেত হাতে নিয়ে গুরুজি বলে, ” বল তোর কোন বেতটা পছন্দ। না হলে তিনটে বেত দিয়েই পেটাব। ” বালকটি চোখের জল ফেলতে ফেলতে একটি বেতের দিকে আঙুল তুলে দেখায়। তারপর তাকে পা দুটি তুলতে বলে গুরু জি। পায়ের পাতায় অবিরত বেতের বাড়ি। ঘরের মধ্যে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে আরও অনেক বালক ও কিশোর। হয়ত গুরু কুলের নিয়ম না মানলে তাদেরও এই অবস্থা হতে পারে, সেই শিক্ষা মজ্জাগত করার জন্যই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে তাঁদের।
একাধিক আইনজীবির মতে এভাবে কাউকে মারা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারা অনুযায়ী শাস্তি যোগ্য অপরাধ। দোষী সাব্যস্ত হলে জেল ও জরিমানা দুই হতে পারে। আর ৩৫২ ধারা অনুযায়ী বিনা প্ররোচনায় কাউকে এভাবে মারধর করলে জেল ও জরিমানা দুই হতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এতটা অমানবিকতার শিকার হয়েছে যে অসহায় বালক, সে কি কোনো বিচার আদতে পাবে। নাকি বিচারের বাণী নীরবে কাঁদে…