ব়্যাট-হোল প্রযুক্তিতে চলছে উদ্ধার কাজ, উত্তরকাশী সুড়ঙ্গে আর ৫ মিটার দূরত্বে শ্রমিকরা
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কী ভাবে সুড়ঙ্গে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়া হচ্ছে? গর্তখোড়ার প্রথম ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, চার জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন একটি পাইপের ভিতর থেকে বেরিয়ে থাকা দড়ি টানছেন। সর্বশক্তি দিয়ে দড়িটি টানতে দেখা গিয়েছে শ্রমিকদের। আর চতুর্থ জনকে দেখা গিয়েছে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে।
VIDEO | Manual drilling continues at Silkyara tunnel in Uttarkashi, Uttarakhand to evacuate the 41 trapped workers. pic.twitter.com/3Ci13IxQ0O
— Press Trust of India (@PTI_News) November 28, 2023
সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় খনন কাজ চলছে। উল্লম্বভাবে খোঁড়াখুঁড়ির পাশাপাশি ড্রিফট ড্রিলিং টেকনোলজিতে ছোট ছোট গর্তও খুঁড়ে পথ তৈরি করছেন উদ্ধারকারীরা। ব়্যাট-হোল প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুভূমিক খননকাজ চালানো হচ্ছে। সেই কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। জানা গেছে, এখন সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের থেকে আর মাত্র ৫ মিটার দূরে রয়েছে উদ্ধারকারী দল।
রাতভোর খননকাজ চলেছে। উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টি ও তুষারপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। কাজেই আবহাওয়ার মতিগতি বিগড়ে যাওয়ার আগেই কাজ সেরে ফেলতে চাইছেন উদ্ধারকারীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের শুরু হয়েছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। মাইক্রো টানেলিং বিশেষজ্ঞ ক্রিস কপার বলেছেন, ম্যানুয়াল ড্রিলিং করে অনেকটাই এগনো গেছে। অন্ধকার সুড়ঙ্গ থেকে টেনে বের করা হয়েছে অগার মেশিনের ধ্বংসাবশেষ। কংক্রিটের জঞ্জাল সরিয়ে ৫০ মিটার অবধি এগিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। আর ৫ থেকে ৬ মিটার দূরত্ব বাকি। রাতে খননকাজে আর কোনও বাধা আসেনি বলেই জানিয়েছেন তিনি।
ন্য়াশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ)-র সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল সায়েদ হাসনায়েন বলছেন, বিকল্প ৬টি উপায় ভেবে রাখা হয়েছে। এক পথ বন্ধ হলে, অন্য পথ খুলবে।
আনুভূমিকভাবে খননকাজে ব্যবহৃত অগার মেশিন সুড়ঙ্গের ভেতরে ধাতব জালে আটকে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এই মেশিনের ভাঙা টুকরো বের করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শ্রমিকদের। সুড়ঙ্গের পথে কংক্রিটের আবর্জনা বড় বাধা তৈরি করেছে। তাই এখন ‘ভার্টিকাল ড্রিলিং’ বা উল্লম্বভাবে খোঁড়খুঁড়িতেই বেশি জোর দিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
পাশাপাশি ইদুরের গর্তের মতো ছোট ছোট গর্ত খুঁড়ে পাশাপাশি রাস্তা তৈরি হচ্ছে। বারকোট টানেলের দিক থেকেও হচ্ছে খননকাজ। ৪৮৩ মিটার সুড়ঙ্গের ১০ মিটারের মতো সেদিক থেকেও খোঁড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অয়েল অ্যান্ড ন্যাচরাল গ্যাস কমিশন (ওএনজিসি)-কে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের সাহায্যে মোট ৫ কিমি রাস্তা তৈরি করতে হবে।
টানা ১৭ দিন অন্ধকার কূপে আটকে থেকে শ্রমিকরা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। তাঁদের মনের জোর বাড়ানোর জন্য কাউন্সেলিং করছেন মনোবিদরা। তাঁদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কম তেল-মশলাযুক্ত পুষ্টিকর খাবার, নুন, জলের পাউচ, এনার্জি ড্রিঙ্কস পাঠানো হচ্ছে। ওয়াকিটকির মাধ্যমে শ্রমিকদের কাউন্সেলিং করছেন মনোবিদরা।
চিকিৎসকেরা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা এবং বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত, দু-দফায় শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। ‘চিন্তার কিছু নেই, খুব তাড়াতাড়ি আমরা পৌঁছে যাব’, এই কথাই বার বার বলা হচ্ছে তাঁদের। উদ্ধারকারীদের আশা খুব দ্রুতই শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হবে।