দেশের সময়: আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তার পরই ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে নয়ডার যমজ অট্টালিকা। বোতাম টিপে মাত্র ৯ সেকেন্ডেই ধ্বংস করে দেওয়া হবে কুতুব মিনারের চেয়েও উঁচু এই অট্টালিকা। চার হাজার কেজি বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছে।
যমজ অট্টালিকা ভাঙতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে নয়ডায়। সকাল থেকেই আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। কারও কারও মনে আতঙ্কও তৈরি হয়েছে। অনেক বাসিন্দাই এই ফুরসতে বেড়াতে গিয়েছেন। কেউ আবার হোটেলে চলে গিয়েছেন। বহুতল ধ্বংস ঘিরে যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে, সে জন্য তৎপর প্রশাসন।
নয়ডার সেক্টর 93-A। আদালতের নির্দেশে সুপারটেকের টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষার ঘড়ি দেখতে শুরু করেছে সারা শহর। বহু মানুষ শনিবার মধ্যরাতে জড়ো হয়েছিলেন টুইন টাওয়ারের সামনে। এই বিখ্যাত বিল্ডিংয়ের সঙ্গে শেষ সেলফি তুলছিলেন সাধারণ মানুষ। যমজ দুই টাওয়ারের ভিডিও তুলছিলেন উত্তেজিত সাধারণ মানুষ। প্রায় ১০০ মিটার লম্বা এই টাওয়ারগুলি রবিবার দুপুর ২.৩০ টেয় ভেঙে ফেলা হবে। সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশ অনুযায়ী এমারেল্ড কোর্ট সোসাইটি এই ভবন নির্মাণের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
দুপুর আড়াইটেই ৪০ তলা এই বিতর্কিত অট্টালিকা ভাঙা হবে। সকাল থেকেই এলাকা খালি করে দেওয়া হয়েছে। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এলাকার লোকজনকে। রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে যান নিয়ন্ত্রণ।
দুটি বহুতল ভাঙতে সবথেকে বেশি হলে দশ থেকে পনেরো সেকেন্ড সময় নেওয়া হবে। দুপুর সোয়া দুটো থেকে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে বন্ধ করে দেওয়া হবে যান চলাচল। জোড়া এই বহুতল ভাঙার আধ ঘণ্টা পর ওই রাস্তায় ফের যান চলাচল শুরু হবে। চলবে না মেট্রো। আশপাশে উড়বে না বিমান। সকাল থেকে ঘটনাস্থলে আসতে শুরু করেছে ক্রেন। মোতায়েন করা হয়েছে ৫৬০ জন পুলিশ কর্মী। রয়েছে কুইক রেসপন্স টিম।
নজরদারিতে থাকছে ৩০০টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। এই জোড়া বহুতল ভাঙার ফলে এলাকায় অন্তত ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। যা সরাতে সময় লাগবে অন্তত তিনমাস। ডিটোনেটর দিয়ে ভাঙা হবে ওই যমজ বহুতল। নিচ থেকে উপরের দিকে ভাঙা হবে এই জোড়া বহুতল।
বিস্ফোরণের আগে আশপাশের আবাসনগুলি পরীক্ষা করা হবে, সেখানে কেউ রয়েছেন কি না। থাকলে তাঁদেরকে বাইরে বের করে আনা হবে। অ্যাপেক্স ও সিয়ান ধুলিস্যাৎ হয়ে যাওয়ার আগে মোবাইল ক্যামেরায় তার ছবি তুলে রাখার হিড়িক পড়েছে। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন ডিনামাইট।
তবে এই জোড়া অট্টালিকা ভাঙার সিদ্ধান্তে বহু মানুষের। তাঁরা বলছেন, সমস্ত জমানো টাকাপয়সা দিয়ে এই বহুতলে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখন তাঁদের চোখের সামনে নিজেদের বাসস্থান গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে, তা মানতে পারছেন না তাঁরা।