দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা : ১০৮ পুরসভার নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয় নিয়ম মেনেই। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় , সুব্রত বক্সিরা সাংবাদিক বৈঠক করে সেই তালিকা প্রকাশ করে। দার্জিলিং ছাড়া প্রায় সব পুরসভার তালিকাই প্রকাশ করা হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনেই এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেই সাংবাদিক বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই তালিকা আপলোড করা হয় তৃণমূলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়ে লিস্ট। ২১৬ পাতার সেই তালিকায় ছিল প্রার্থীদের নাম। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে আচমকা দাবি করা হয়, ওই তালিকা আসল নয়। ওই তালিকায় কারও সইও নেই। ভুয়ো তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করে তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপর চলে ঘাসফুল নেতাদের দীর্ঘ বৈঠক। পরে নতুন তালিকা পাঠানো হয় জেলায়।
নতুন তালিকা পাঠানো হল জেলা সভাপতিদের। নতুন তালিকায় সই করেছেন সুব্রত বক্সি ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আগের তালিকার সঙ্গে ২০ শতাংশ পার্থক্য রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যের বকেয়া ১০৮টি পুরসভার ভোটে শুক্রবার বিকেল নাগাদ প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, নবীন ও প্রবীণের ভারসাম্য রেখে প্রার্থিতালিকা তৈরি হয়েছে। তবে কোনও বিধায়ককে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। শুধু তাাই নয়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কঠোর ভাবে মেনে চলছে তৃণমূল। পাশাপাশি, পরিবারতন্ত্রের উপরেও রাশ টেনেছে তারা।
কিন্তু প্রার্থিতালিকায় ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি এবং পরিবারতন্ত্রে রাশ টানার বিষয়টিতে বেশ কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায়। সেই তালিকায় মহেশতলা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী করা হয়েছে মহেশতলার বিধায়ক দুলাল দাসকে। প্রসঙ্গত, এর আগে দুলাল ওই পুরসভারই ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতেন। এ বার তাঁকে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বীরভূমের বোলপুর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বস্ত্রশিল্প দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের স্ত্রী কুন্তলা সিংহকে। গত পুরভোটেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। আবার রামপুরহাট পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে দম্পতি সৌমেন ভগৎ এবং মীনাক্ষী ভগৎ-কে। যা নিয়েও বিতর্ক হয়।
শাসকদলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই আবহে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, এই তালিকা বদলাতে পারে। বস্তুত, যে তালিকা শুক্রবার প্রকাশ করা হয়েছে, সেই তালিকাটি নাকি ‘চূড়ান্ত’ নয়। ফলে তাতে বহু বদলও হতে পারে। দলের এক নেতার দাবি, ‘‘ভুল তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই তালিকা বদলানোর সম্ভবনা প্রবল।’’
এর পরেই শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ তৃণমূল সূত্রে জানা গেল, পুরভোটের প্রার্থিতালিকায় বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে। নয়া তালিকা ইতিমধ্যেই জেলা সভাপতিদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।