TMC : প্রয়াত বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি দীলিপ কুমার দাস

0
474

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার ভোর ৫ টা নাগাত প্রয়াত হন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা বনগাঁ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ শহর সভাপতি এবং বনগাঁ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীলিপ কুমার দাস। বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দীলিপ বাবু ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি গত পৌরভোটের আগে থেকেই কলকাতার টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে ক্যান্সার বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এক সপ্তাহ আগে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসলেও শারীরিক অসুস্থতা বাড়ায় ফের বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ লড়াই এর পর বুধবার সকালে বনগাঁ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ৷

এদিন দুপুরে বনগাঁ মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল প্রয়াত বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি দিলীপ দাসের। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তৃণমূল জেলা সভাপতি গোপাল শেঠ সহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতানেত্রী হাজির ছিলেন। 

এদিন তাঁর বাড়ি থেকে মরদেহ শ্মশানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার পথে অভিযান সংঘের মোড়, বনগাঁ পুরসভা সহ বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি দাঁড় করানো হয়। সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান তাঁর পরিচিত এবং শুভাকাঙ্খীরা। শেষে বনগাঁ শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। 

দিলীপ দাস ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত হন। সেই সূত্রেই তাঁকে একসময় বনগাঁ শহর সভাপতির পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও পরে তাঁকে সরিয়ে অন্যজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি রাজনীতি থেকে কিছুটা সরে যান। তারইমধ্যে তিনি একবার কাউন্সিলরও হন।

এবারের পুর নির্বাচনে তিনি ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন। ভোটের ফলাফলে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৩৬১ এবং জয়ী হয়েছিলেন ৩৮৬ ভোটে। ওই ওয়ার্ডে তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে প্রার্থী হন দলেরই একজন প্রাক্তন কাউন্সিলর। তারপরেও জয়ী হন তিনি। যদিও শপথগ্রহন অনুষ্ঠানের সময় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আর সেই কারণে তিনি কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিতে পারেন নি। সেই কাজ অপূর্ণই রয়ে গেল। 

প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগে দলের রাজ্য নেতৃত্ব যখন রাজ্যজুনে নতুন করে সংগঠন সাজাতে শুরু করে, তখন তৃণমূলের বনগাঁ শহর সভাপতি করা হয় দিলীপ দাসকে। তাঁর মতো একজন বর্ষিয়ান নেতাকে ফিরে পেয়ে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন দলের অনেক নেতাকর্মীই। সবাইকে নিয়ে চলার, সবার সঙ্গে হাসিমুখে কতা বলার গুন তাঁর মধ্যে ছিল।

শুধু রাজনৈতিক দায়িত্বই নয়, দীর্ঘদিন ধরে তিনি ট্রাক মালিক সমিতি রাজ্য তথা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বও সামলান। আমদানী–রপ্তানী বানিজ্যের নানা আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন তিনি। ফলে, সেদিক থেকেও প্রসাসনের কাছে পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি।

৭৯ বছর বয়সী দিলীপ দাস সম্প্রতি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার টাটা ক্যান্সার হাসপাতালে টানা ১২ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে অবশ্য চিকিৎসকেরা তেমন কোনও আশার আশার বাণী শোনান নি। ফলে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। সোমবার ফের অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার ভোরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিন তাঁর অন্তিম যাত্রায় বনগাঁ রেলবাজার এলাকা সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছেন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে৷ স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা রথীন হালদারের কথায় ভূপেন্দ্রনাথ শেঠ প্রয়াত হওয়ায় যেমন ভাবে সেই সময় বনগাঁর মানুষ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিলেন, আজও দীলিপ বাবুর প্রয়াণে সেই স্মৃতি যেন আরেকবার ফিরে এলো স্থানীয় মানুষের মনে ৷ ফের আরও একবার আমরা অভিভাবকহীন হয়ে গেলাম৷

বর্ষীয়ান নেতা দিলীপ দাসের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে বনগাঁর রাজনৈতিক মহলে। 

Previous articleRampurhat: ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না’, জানালেন মমতা
Next articleRampurhat Clash:রামপুরহাটের ঘটনায় অ্যাকশন হবে, বৃহস্পতিবার যাচ্ছি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here