দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার বিকেলে বারাসতে এসে নিজের অবস্থান বদল করলেন বাগদার বিজেপি বিধায়ক তথা তৃণমূলের নবনিযুক্ত বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস৷
এদিন বারাসত থানায় তিনি আসেন ব্যক্তিগত কাজে। সেখানে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন এখন তিনি কোন দলের? এই প্রশ্নের উত্তরে থমকে গেলেন বিজেপির বিধায়ক হয়েও তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস।
দাবি করেন, জনপ্রতিনিধিদের কোনও দল হয় না৷ এমনকি নিজেকে তৃণমূলেরই লোক বলেও দাবি করেন তিনি৷ প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেও তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেছিলেন, বিজেপি-র বিধায়ক, বিজেপিতেই আছেন। অথচ এখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি৷
তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস৷ সভাপতি হওয়ার পর বিশ্বজিৎ দাস এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণের সামনে বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধির কোনও দল হয় না। জনপ্রতিনিধিদের সার্টিফিকেট থাকে, সেখানে বিধায়কের সার্টিফিকেটে লেখা থাকে না বাম, তৃণমূল, না বিজেপি৷’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বাম, তৃণমূল, বিজেপি সবার মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম নরেন্দ্র মোদী৷ সেই জায়গা দাঁড়িয়ে যাঁরা জনপ্রতিনিধি, তাঁরা সকলের৷’’
তিনি বিজেপি বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের সভাপতি হলেন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই তিনি নিজেকে তৃণমূলেরই লোক বলে দাবি করেন৷ তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের সভাপতি হলাম কারণ আমি তৃণমূলেরই৷’’
সিপিআইএম-এর তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে বিজেপি র বিধায়ক হয়েও আপনি তৃণমূলের জেলা সভাপতি হয়েছেন৷ এই প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘সিপিআইএম দলটা তো দূরবীন দিয়েও দেখা যাচ্ছে না৷ ৩৪ বছরের একটা দল, যাকে এখন দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে৷ যে দলের একটা বিধায়ক পর্যন্ত নেই৷ ফলে তাঁর দলের কারও বক্তব্যের কোনও উত্তর দিতে হবে বলে মনে করি না৷’’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে তৃণমূলের তৎকালীন বিধায়ক বিজেপি তে যোগ দেন। এরপর গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা আসন থেকে বিজেপি- র হয়ে টিকিট পান তিনি এবং জেতেনও। এরপর তিনি নিজেকে বিজেপি- র বিধায়ক বলেও দাবি করেন৷ এখানেই শেষ নয়, বিজেপি- র বিধায়ক বিজেপিতেই আছেন বলে দাবি করেন তিনি৷ সেই বিশ্বজিতের কাঁধেই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল।
আর তৃণমূলের সভাপতি হয়েই তিনি নিজেকে তৃণমূলের লোক বলেও দাবি করছেন৷ এমনকি, জনপ্রতিনিধিদের কোনও দল হয় না বলেও বারবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন দাবি করে যান তিনি৷’জনপ্রতিনিধির কোনও দল হয় না’ দাবি তৃণমূলের-র নবনিযুক্ত সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিশ্বজিৎ যাঁর হাত ধরে বিজেপিতে গিয়েছিলেন এবং তৃণমূলে ফিরেছিলেন, সেই মুকুল রায়ও কোন দলের তা গুলিয়ে ফেলেন। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফিরে যান। এর পরে একাধিক বার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি বিজেপির না তৃণমূলের তা গুলিয়ে ফেলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। সেই হিসাবে প্রকাশ্যে বিজেপি বিধায়ক হিসাবেই পরিচয় দেওয়ার কথা তাঁর। যদিও সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়ে ফেরার পথে তিনি নিজেকে তৃণমূলের বলে পরিচয় দেন। সেই বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বজিৎকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।