দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাগদার চন্দন ওরফে রঞ্জনের বিরুদ্ধে চাকরি বিক্রির অভিযোগ আগেই ছিল। এবার রঞ্জনকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি কেনার হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়া গেল।
নদিয়ার কল্যাণীর বাসিন্দা পাপিয়া মুখোপাধ্যায়ের স্বামী জয়ন্ত বিশ্বাস স্বীকার করে নিলেন যে তাঁর স্ত্রী টাকা দিয়ে স্কুলের চাকরি পেয়েছেন। জয়ন্ত জানিয়েছেন, ২০১২ সালে তাঁর স্ত্রী টেট দিয়েছিলেন। কিন্তু সে বছর পাশ করেননি। ২০১৫ সালে ফের পরীক্ষা দেন পাপিয়া। সে বারও অকৃতকার্য হন। কিন্তু সোজা পথে সাফল্য না আসায় এ বার অসৎ উপায় অবলম্বন করা হয় বলে জয়ন্ত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “চন্দন নামে এক জনকে পাপিয়া সাড়ে লক্ষ টাকা দিয়েছিল বলে শুনেছি। সেই অর্থের বিনিময়ে ২০১৭ সালে চাকরি পায় পাপিয়া” ৷
সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে জয়ন্ত জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে নদিয়ার হবিবপুরের পানপাড়ার রাঘপুর কনভার্টেড জুনিয়ার প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী পাপিয়া মুখোপাধ্যায়। স্ত্রী বার বার টেটে অকৃতকার্য হওয়ার পর চন্দনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জয়ন্তুই। বাগদার মামা-ভাগিনা গ্রামে জয়ন্তর পৈতৃক ভিটে রয়েছে। রঞ্জন ওরফে চন্দন বাগদারই লোক। সেই সূত্রেই চেনাশোনা। তার পর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে ঘরে চাকরি আসে।
জয়ন্তর এই দাবি তথা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করেছেন পাপিয়া মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে তাঁর অনেক দিন ধরেই সম্পর্ক নেই। পাপিয়ার দাবি, ২০১২ সালে তাঁর পুত্র সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে তিনি টেট দিতে পারেননি। তবে ওই অ্যাডমিট কার্ড নিয়েই ২০১৪ সালে তিনি পরীক্ষায় বসেন। নিয়ম মতো মোবাইলে এসএমএস এসেছিল। এর পর ২০১৭ সালে স্কুলে যোগ দিয়েছেন তিনি। পাপিয়ার এও দাবি, জয়ন্ত কাকে টাকা দিয়েছেন তাঁর জানা নেই।
তবে এ কথা বললেও এও ঘটনা যে পাপিয়া অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটি নিয়েছেন। গত ৩১ অগস্ট তিনি শেষবার হবিবপুরের স্কুলে গিয়েছিলেন। তার পর আর যাননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিদ্ধার্থশঙ্কর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এর বেশি তিনি কিছু বলতে পারবেন না। পাপিয়ার নিয়োগ নিয়ে কোনও অনিয়ম রয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও তাঁর কোনও ধারণা নেই।
SSC মামলায় তদন্তে নেমে একের পর এক মিডলম্যানের সন্ধান পাচ্ছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। ধৃত দ্বিতীয় মিডলম্যান প্রসন্নকুমার রায়ের সম্পত্তিও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। তদন্তে নেমে তার নামে বিলাসবহুল আবাসনে ফ্ল্যাটের হদিশ পেয়েছে সিবিআই ।
নিউটাউনের অভিজাত আবাসনে হানা দেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। সি বি আই সূত্রে খবর, ওই ফ্ল্যাট প্রসন্ন ঘনিষ্ঠ এক রৌনক কোঠারী নামে জনৈক ব্যক্তির। অনুমান করা হচ্ছে, প্রসন্নকুমার রায় ওই আবাসনের ফ্ল্যাটে কখন ঢুকতেন, কার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন ইত্যাদি নিয়ে খুঁটিয়ে তথ্য জোগাড় করতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
এরপর আবাসনের একজন নিরাপত্তারক্ষীকে নিয়েই নির্দিষ্ট একটি ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন CBI আধিকারিকরা। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশি চালান তাঁরা। গোয়েন্দাদের সঙ্গেই ছিলেন CRPF জওয়ানরাও। এর আগে এই দুর্নীতি মামলায় ধরা পড়েছিল প্রদীপকুমার সিনহা। তাঁকে জেরা করেই প্রসন্নকুমার রায়ের হদিশ পান গোয়েন্দারা। এই মিডলম্যানরাই অনুত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলত বলে অভিযোগ।