অর্পিতা বনিক , বনগাঁ : বিকশিত যুবা, বিকশিত ভারত- এটিই ২০২৩ সালের জাতীয় যুব দিবসের থিম। ১২ জানুয়ারি ভারতজুড়ে পালন করল এক বাঙালি যুবকের জন্মদিন। কালের গণ্ডি পেরিয়ে যাঁর উজ্জ্বল চোখ দু’টি আজও পথ দেখায়।
১৯ শতকে বাংলা তথা ভারতের জাগরণের অন্যতম প্রধান পুরুষ বলাই যায় স্বামী বিবেকানন্দকে। যে সময় ভারতের একপ্রান্তে বয়ে চলেছে শিক্ষা সংস্কৃতির নবজোয়ার, তখনই ভাববাদী আন্দোলনের স্রোত ভাসিয়ে দিয়েছে দেশের বদ্ধমূল চিরাচরিত প্রথাকে, তারই প্রধান কাণ্ডারী বিবেকানন্দ।
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী স্মরণে ১২ জানুয়ারি জাতীয় যুব দিবস পালিত হল অন্যবারের মতোই। ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার স্বামীজির জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় যুব দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। পরের বছর থেকেই এই দিনটি বিবেকানন্দের শিক্ষাকে সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য পালিত হয়ে আসছে৷
বৃহস্পতিবার স্বামী বিবেকানন্দের ১৬১-তম জন্মদিন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রে মহাসমারোহে পালিত হয়। উত্তর কলকাতার সিমলা স্ট্রিটে স্বামীজির বাড়িতেও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এদিন। পাশাপাশি গোটা দেশে বিবেকানন্দের জন্মদিনটি জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। সেই উপলক্ষ্যেও নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় রাজ্য জুড়ে ৷
বিবেকানন্দের জন্মদিবসের এই শুভ দিনটিতে রাজ্যের পাশাপাশি বনগাঁ মহকুমাজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হয় যুবদিবসও ৷বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে ৷
চাঁপাবেড়িয়া রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের ও রামকৃষ্ণ অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে মাননীয় সম্পাদক স্বামী নিত্যরূপানন্দ মহারাজ এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাবৃন্দ ও সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকবৃন্দ মিলে এক বিশাল পদযাত্রার আয়োজন করেন এদিন।
বিশেষ পূজা ও হোমযোজ্ঞের পর এদিন বিদ্যালয়ের নতুন কক্ষ সংস্কারের অনুষ্ঠান সূচীত হয়।
উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান প্রাক্তন বিচারক শ্যামল কুমার সেন , বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ ৷
প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তৃতা দেন মাননীয় সম্পাদক স্বামী নিত্যরূপানন্দ।সবশেষে সন্ধ্যা আরতীর পর ‘নটি বিনোদিনী’ যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয় ।
প্রধান বিচারক তথা প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল কুমার সেন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন করেছিলেন প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা শিক্ষানিয়ে বড় হবেন তাঁদের কথা ভেবে ৷বনগাঁর চাঁপাবেড়িয়া রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন ও রামকৃষ্ণ অ্যাকাডেমিতে এসে আমার মনে হচ্ছে, এখানেও সেই পরিবেশ রয়েছে৷ ছাত্র-ছাত্রীদের যদি প্রকৃতির সঙ্গেযোগ রেখে বড় করা যায়শিক্ষক -শিক্ষিকারাও যদি সেই ভাবে শিক্ষাদেন তাহলে পড়ুয়ারা অনেক সজীব হবেন,প্রাণবন্ত হবেন এবং অনেক ভাল কাজ করতে পারবে ৷ কারণ বনগাঁ দূষণমুক্ত জায়গা৷শিশুরাও এখানে দূষণ মুক্ত জীবন পেয়ে অনেকবড় কাজ করতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস ৷
পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন এই রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন ও রামকৃষ্ণ অ্যাকাডেমির জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে যথা সম্ভব সাহায্য করা হবে এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ এখানে শুরু করা হবে যার মধ্যে পরিশ্রুত পানীয় জল এবং রাস্তা ও মন্দির অঙ্গন সংস্কার-এর কাজও রয়েছে৷ ছবিগুলি তুলেছেন অঙ্কিতা বনিক।