দেশের সময়, বাগদা: রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে ‘মাতাল’ বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় এক সভা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিশানা করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে জারি করা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে বিরোধী দলনেতাশুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোষ্য। একটা মাতাল।
এ হচ্ছে তৃণমূলের শাখা সংগঠন। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানি, মহামান্য বিচারপতি গোটা ব্যবস্থাপনা নিয়ে নির্দেশিকা দেবেন। পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে আমরা আশাকরি বিচারব্যবস্থা এগিয়ে আসবে এবং রক্তপাতহীন অবাধ নির্বাচনের জন্য তাঁরা হস্তক্ষেপ করবেন। এই নির্বাচন কমিশন মানেই তৃণমূল। আর তৃণমূল মানেই নির্বাচন কমিশন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমস্ত কাজ হচ্ছে। প্রতিটা নির্দেশিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হোয়াটসঅ্যাপে যাচ্ছে। আপনারা বাইরে থেকে বুঝতে পারবেন না, পশ্চিমঙ্গের গণতন্ত্রকে কোথায় গিয়েছে এই পিসি-ভাইপো পরিবাবের কোম্পানি।’
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার নিয়ে আজই এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় টহল দেবে। তাদের নাকা চেকিংয়ে ব্যবহার করা হবে। তারা মানুষের আস্থা অর্জনের কাজ করবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং দুই রাজ্যের সীমানা পাহারা দেওয়ার কাজেও ব্যবহার করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। কিন্তু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে বলে কোনও উল্লেখ নেই এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে।
নির্বাচন কমিশনের এহেন বিজ্ঞপ্তির পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ভোট দিতে পারবেন না ভোটাররা। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এবারে নির্বাচনে প্রথম থেকেই বাহিনী নিয়ে বিশেষভাবে জলঘোলা হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করানোর জন্য লাগাতার দাবি জানাতে থাকেন বিরোধীরা। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়ায়।
এরপর আদালতই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় নির্বাচন করানোর নির্দেশ দেয়। এখানেই শেষ নয়, আদালত আরও নির্দেশ দেয় যে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের চেয়ে যেন কোনওভাবেই বাহিনীর পরিমান কম না হয়। ২০১৩ সালে ৮২০ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে হয়েছিল নির্বাচন। এবারের নির্বাচনের জন্য মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চায় কমিশন। কিন্তু এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে বাহিনীর নিরাপত্তায় ভোটাররা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন।