
শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, ‘বাংলায় যেভাবে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, সেই অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার লিস্টে তোলা, সব সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া, সরকারি চাকরি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে।’
‘ছাব্বিশেই তৃণমূলের শেষ লড়াই’, এই লড়াইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার বার্তা দিলেন সুকান্ত মজুমদার । মূলত বিজেপি সাংসদ অভিযোগ করেন, ভোট ব্যাঙ্ক মজবুত করতে রাজ্য সরকার যেভাবে অনুপ্রবেশে মদত দিয়েছেন তার ফলে বাংলা-সহ গোটা দেশেই জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গেই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শাসকের বিরুদ্ধে এই অনুপ্রবেশকেই অন্যতম হাতিয়ার করতে পারে বিজেপি।

‘তৃণমূল শুধুমাত্র প্রশাসনের জোরেই টিকে রয়েছে, ৫০-৬০ শতাংশ প্রশাসন নিরপেক্ষ হলে আর মাটিতে খুঁজে পাওয়া যাবে না তৃণমূল কংগ্রেসকে’, রাজ্যের শাসক দলকে ঠিক এভাবেই আক্রমণ শানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার । একইসঙ্গে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, কেন বাংলায় বিজেপিকে দরকার?
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে আরও একবার ‘অপারেশন বাংলা’ প্রসঙ্গ শোনা যায় সুকান্ত মজুমদারের মুখে। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ‘গায়ে মানে না আপনি মোড়ল’ কটাক্ষ করেছেন। তাঁর পাল্টা জবাবেই সুকান্ত বলেন, ‘কিছু মানুষের ব্যবস্থা করার জন্য অপারেশন সিঁদুরের মতো অপারেশন বাংলাও প্রয়োজন।’

প্রসঙ্গত, ফিরহাদ বলেছিলেন, ‘ভারতের সেনারা পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছে। এতে নরেন্দ্র মোদীর কোনও কৃতিত্ব নেই। বরং একটা দেশের ভয়ে কাপুরুষের মতো সেনাবাহিনীকে আটকে দিয়েছে। এটা অন্যায়। ভারতের সম্মান রক্ষা করেছে সেনাবাহিনী।’
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে পরিবর্তনের আশায় মানুষ তৃণমূলকে সমর্থন করলেও বিগত এক দশকে তারা শুধু তোলাবাজি, নিয়োগ দুর্নীতি, সরকারি প্রকল্পে কাটমানি ও রাজনৈতিক হিংসার ছবি দেখেছে ।

কয়েকমাস পরই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূলকে সিংহাসনচ্যুত করে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া বিজেপি। রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও যে বাংলার নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন, সম্প্রতি বঙ্গ সফরে এসে তার স্পষ্ট করেছেন মোদী ও শাহ। এবার সুকান্তও বুঝিয়ে দিলেন, সময় থাকতে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে শাসকের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়াবে বিজেপি।
এসবের পাশাপাশি, করোনার প্রভাব কাটিয়ে দারিদ্রতার হার অনেকটাই কমেছে, বিশ্বব্যাঙ্কের এই রিপোর্টকে দেশের সাফল্য হিসেবেই মনে করছেন সুকান্ত মজুমদার। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি বঙ্গ সফরে এসে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তৃণমূল সরকারকে কার্যত তুলোধনা করে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ) এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । একই সুরে শোনা গেল সুকান্ত মজুমদারের কণ্ঠেও।