দেশের সময়: শতাব্দী প্রাচীন কলকাতার হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবারের দাবি, তিন বছর হল তিনি অবসর নিয়েছেন। অথচ পেনশন পাচ্ছিলেন না। সেকারণেই হয়তো তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার আলিপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে ওই শিক্ষকের দেহ উদ্ধার হয়।
হেয়ার স্কুলে শিক্ষকতা করার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুনীল দাস নামে ওই শিক্ষককে শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত করেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর নিজের ঘরে শুতে গিয়েছিলেন সুনীলবাবু। সন্ধ্যার সময় চা দিতে গিয়ে বাড়ির লোকজন দেখেন, তখনও ঘরের দরজা বন্ধ। তাঁরা দরজায় নক করেন। কিন্তু ভিতর থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়।
এর পরই তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভাঙে। দেখা যায়, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহ ঝুলছে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ৬৩ বছরের ওই শিক্ষক তাঁর শিক্ষকতা জীবন শুরু করেছিলেন ১৯৮০ সালে মুর্শিদাবাদের একটি সরকারি স্কুল থেকে। তিনি কলকাতায় সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলে পড়িয়েছেন।
একইসঙ্গে মালদহ ও হুগলি জেলার দু’টি স্কুলেও তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি হেয়ার স্কুল থেকে অবসর নেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে ওই স্কুল থেকে অবসরের কিছুদিন আগেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে শিক্ষারত্ন পুরষ্কার নেন। পরিবারের দাবি, অবসরের পর পেনশনের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার বিকাশ ভবনে গিয়েছিলেন।
কিন্তু তাঁর পেনশন চালু হয়নি। পেনশন ছাড়া কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলেন, বলেছেন সুনীলবাবুর স্ত্রী সাধনাদেবী। তাঁর দাবি, পেনশন চালু না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি এতটাই চাপে ছিলেন যে, তা সামলাতে না পেরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে আমাদের মনে হয়। আত্মঘাতী ওই শিক্ষকের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।