দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ কয়েকদিন আগে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে ডেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আপনি রদবদলের ব্যাপারে একবার অভিষেকের সঙ্গে বসুন’।
সেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। হলও তাই। দিদির নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে গিয়ে জেলা ধরে ধরে বদলের ব্যাপারে আলোচনা করলেন সুব্রত বক্সী। পরে বিকেলে নবান্নে গিয়ে সে ব্যাপারে রিপোর্টও দিলেন নেত্রীকে।
প্রশ্ন হল, সুব্রত বক্সীর ভূমিকা এখানে কী? রদবদলেই বা কী হতে পারে? এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে, তৃণমূলে ক্ষমতার বিন্যাস যেরকম তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনায় বসেই রদবদলের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, দিদি সেটা দেখাতে চান না। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখাতে চান, দল আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বক্সীর ভূমিকা এখানেই।
তবে মজার বিষয় হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক কিছু বললে তা নিয়ে আপত্তি করা বা ভিন্ন মত দেওয়া সুব্রত বক্সীর ধাতে নেই। বরং দলের মধ্যে ধারণা হল, সুব্রত বক্সী হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলানোর মানুষ। তা ছাড়া সুব্রত বক্সী রাজ্য সভাপতি হলেও জেলা সংগঠনের অনেকককে চেনেন না বা ব্যক্তিগত ভাবে নিয়মিত যোগাযোগ নেই।
অর্থাৎ অনেকের মতে, মঙ্গলবারের বৈঠক ছিল অনেকটাই পোশাকি। আই প্যাকের সমীক্ষা ও পরামর্শক্রমে জেলা কমিটিতে বদলের যে তালিকা তৈরি করেছে অভিষেকের দফতর, সেটা রাজ্য সভাপতিকে দিয়ে পাশ করিয়ে নেওয়া। তার পর রাজ্য সভাপতিকেই দায়িত্ব দেওয়া যাতে তিনি দলনেত্রীর কাছ থেকে সেই তালিকা তথা বদলের ব্যাপারে অনুমোদন আদায় করে নেন।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর জেলা কমিটিতে রদবদলের ব্যাপারে গত ৪ নভেম্বর সোমবার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন অভিষেক। রদবদলের খসড়া তালিকা সেদিনই চূড়ান্ত হয়ে যায়। কোথায় কোথায় এখনই বদলের প্রয়োজন নেই সে ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিনই তাঁর মত স্পষ্ট জানিয়ে দেন অভিষেককে।
মোটামুটিভাবে কোচবিহার বাদে উত্তরবঙ্গের সব সাংগঠনিক জেলাতেই জেলা কমিটিতে বদল অনিবার্য বলে খবর। দক্ষিণবঙ্গেও বেশ কিছু জেলার কমিটিতে রদবদল হবে। যেমন, কাঁথি, তমলুক, বিষ্ণপুর, ব্যারাকপুর, পুরুলিয়া, বারাসত ইত্যাদি। অর্থাৎ হিসাব মতো প্রায় চোদ্দ থেকে পনেরোটি সাংগঠনিক জেলায় জেলা সভাপতি বদল করা হতে পারে। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হতে পারে দুই মহিলা সাংসদকে। একজন মহুয়া মৈত্র, অন্যজন হলেন কাকলি ঘোষদস্তিদার।
সূত্রের মতে, ২৩ নভেম্বর উপ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর জেলা স্তরে এই রদবদলের তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে। জেলা কমিটিতে বদলের পরই পুরসভায় রদবদলের ব্যাপারে হাত দেওয়া হবে।