দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ SSC: এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতিতে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। আর সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে এবার স্বস্তি পেল রাজ্য।
স্কুল সার্ভিস কমিশনে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে কিনা জানতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই তদন্ত তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে রাজ্য। আজ সেই মামলারই শুনানিতে সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ দিল আদালত।
হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছিল। সিঙ্গল বেঞ্চে রায়ে তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্ত তুলে নিতে জোর সওয়াল করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায়।
হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতি বিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্ত চায় না। হাইকোর্টের এই নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মরিয়া হয়ে লড়ছেন রাজ্যের আইনজীবী। সওয়াল-জবাব চলার সময় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে (এজি) প্রশ্ন করেন, সিবিআই তদন্ত নিয়ে রাজ্যের এত আপত্তি কেন? তাতে এজি জানান, সরকার চায় এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। সেক্ষেত্রে প্রাক্তন বিচারপতিদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করার পক্ষে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য, সুপারিশের ভিত্তিতে কোনও নিয়োগ হয়নি। আর নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে কোনও পুলিশি অভিযোগ দায়ের হয়নি। যদি নিয়োগে বেনিয়ম হত এবং অভিযোগ দায়ের হত তাহলে রাজ্য পুলিশই তার তদন্ত করত।
এজি সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় বিচারপতিদের বলেন, নিয়োগে কোনও পুলিশি অভিযোগ হয়নি তাই এই মামলায় সিবিআই তদন্তের কোনও প্রয়োজনই নেই। নজিরবিহীন ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দরকার পড়ে, এক্ষেত্রে দক্ষ পুলিশ আধিকারিকরা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের ওপর আস্থা রাখা হয়নি। তাঁর আর্জি, তদন্ত যদি করাতেই হয় তাহলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে কমিটি তৈরি করা হোক।
এজি-র বক্তব্য শুনে বিচারপতি ট্যান্ডন প্রশ্ন করেন, কমিশন বলছে তারা সুপারিশ করেনি, তাহলে এত নিয়োগ হল কীভাবে? জবাবে এজি বলেন, যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল এবং যাঁরা নিয়োগপত্র হাতে পাননি, তাঁদের কারও তরফেই কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। এজি-র আরও বক্তব্য, সিবিআই স্থানীয় থানাগুলির সাহায্য ছাড়া তদন্ত করবেই বা কি করে। তদন্তপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা রাখাই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে রাজ্য পুলিশ কি দোষ করল? সিবিআই যদি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকে, তাহলে পুলিশ থাকবে না কেন।
রাজ্যের সওয়ালের পাল্টা বিচারপতিদের প্রশ্ন, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সুপারিশ ছাড়া কীভাবে এত গুলো নিয়োগ হলো। আপনারা যখন কিছুই জানেন না তাহলে কীভাবে তাঁরা চাকরি পেলেন? বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে যে অসচ্ছ্বতার অভিযোগ উঠেছে সে নিয়ে যদি আপনারা সচেতন হতেন এই ঘটনা ঘটত না। আপনার আধিকারিকদের এই বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত করা উচিত ছিল। তাহলে আজ সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠত না।