দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ আন্দোলন, অনশনের পর এবার একে একে ‘অযোগ্য’দের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে যাঁদের বিরুদ্ধে, তাঁদের নিয়োগ বাতিলের প্রক্রিয়া এগোল আরও একধাপ।
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরই বুধবার স্কুল সার্ভিস কমিশন ৬১৮ জন (618 Teachers) নবম-দশম শ্রেণির ‘অযোগ্য’ শিক্ষকের সুপারিশপত্র বাতিল করেছিল। শুক্রবারই সেই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেই কথাই জানিয়ে দেওয়া হল। এরপর থেকে আর শিক্ষক রইলেন না ওই ৬১৮ জন।
২০১৬ সালের নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেই মামলাও হয় হাইকোর্টে। ৯৫২ জনের বিরুদ্ধে ওএমআর শিট বিকৃতি করে অসাধু উপায়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় ৯৫২ জনের মধ্যে ৮০৫ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে যান ৮০৫ জন শিক্ষক। বুধবার এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, চাকরিহারাদের চাকরি থাকবে কিনা তার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেবে কমিশনই। আরও বলা হয়, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব কিছু আইনে চলার ক্ষমতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কমিশন যদি মনে করে তাঁদের চাকরি থাকবে না। তবে সেটাই শেষ কথা।
বুধবার রাতেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে কমিশন। জানিয়ে দেয়, ৬১৮ জনে সুপারিশপত্র বাতিল করা হল। তারপরই হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
সদ্য গ্রুপ ডি মামলাতেও চাকরি বাতিল হয়েছে ১৯১১ জনের। সে ক্ষেত্রেও ওএমআর বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁদের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়ার পর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরি প্রার্থীরা। সেখানে চাকরি বাতিলের নির্দেশ বহাল থাকে। সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি। চাকরি বাতিলের নির্দেশ বহাল রয়েছে সেখানেও। তবে এই ১৯১১ জনকে বেতন ফেরত দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ, তা বাতিল করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
নিয়োগ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে দিনের পর দিন রাস্তায় বসে থেকেছেন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা। সেই আন্দোলন এখনও জারি রয়েছে। এবার অযোগ্যদের নিয়োগ বাতিল হওয়ায় আশা দেখছেন তাঁরা।