রাত কেটে ভোর হয়েছে। চাকরিহারারা অবস্থান থেকে সরেননি। এখনও এসএসসি ভবনের সামনের রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে বসে রয়েছেন তাঁরা। পানীয় জল নেই, শৌচাগার নেই। এই নিয়ে গতকাল সোমবার রাতে এসএসসি ভবনের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা কাটাকাটিও হয় চাকরিহারাদের। এমন পরিস্থিতিতে সকাল সকাল জল আর শুকনো খাবার নিয়ে পৌঁছয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাঁরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ আন্দোলন চলবে ততক্ষণ তাঁরা চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে থাকবেন।

করব, করছি করেও সোমবার যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করেনি এসএসসি । সোমবার বেশি রাতের দিকে একটি বিবৃতি দিয়ে কমিশন বলে, ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে যে, এসএসসি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে। এবং বিভাগের তরফে জানানো হচ্ছে, যে শিক্ষকেরা চাকরি করেছেন, তাঁদের বেতন বর্তমান ব্যবস্থা অনুসারে প্রদান করা হবে।

যদিও এসএসসি-র বিবৃতিতে সন্তুষ্ট হননি আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ঘেরাও করে রেখেছেন আচার্য সদন। তাঁদের আন্দোলনে পাশে দাঁড়িয়েছেন অনিকেত মাহাতো-সহ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’-এর প্রতিনিধিরাও। সোমবার রাতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা করেন চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার সকালে অবস্থানরত শিক্ষকদের পাশে থাকতে এসএসসি ভবনের সামনে শুকনো খাবার এবং জল নিয়ে এসে উপস্থিত হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। জানান, যতক্ষণ অবস্থান চলবে, তাঁরা চাকরিহারাদের পাশে থাকবেন।
গতকাল দুপুর থেকেই চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় ছিলেন চাকরিহারারা। এসএসসি জানিয়েছিল সন্ধে ৬টা নাগাদ তালিকা প্রকাশ করবে। কিন্তু আদতে তা হয়নি। যে কারণে ভবনের বাইরেই রাতভর অবস্থানে বসেছিলেন বিক্ষোভকারী চাকরিহারা শিক্ষকেরা। রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে, নিজেদের দাবিতে অনড় চাকরিহারারা।

বঞ্চিত ‘যোগ্য’রা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে রেখেছেন যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করতেই হবে, নয়তো কাউকে আচার্য সদন থেকে বেরোতে দেওয়া হবে না। এখনও এসএসসি ভবন ‘ঘেরাও’ করে রেখেছেন তাঁরা। কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার-সহ অন্য আধিকারিকেরা এখনও আচার্য সদনের ভবনের ভিতরেই রয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে আচার্য সদনের ভিতরে আটকে থাকা এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “বর্তমানে এই আন্দোলনে শুধু শিক্ষকেরা নেই। বাইরে থেকে আসা বহু আন্দোলনকারীও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।”
