দেশের সময়: সালটা ১৮৫৩। তারিখ ২২ ডিসেম্বর। বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মা সারদা। শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সঙ্গে বিয়ের পর দীর্ঘদিন, ১৯১৫ সাল পর্যন্ত জয়রামবাটির খড়ের চালার মাটির বাড়িতেই কাটিয়েছিলেন সারদাদেবী। ১৯২৩ সালে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সারদানন্দজীর উদ্যোগে সারদা মায়ের দু’টি বাড়িতে অক্ষত রেখে জয়রামবাটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় মিশন। দেখতে দেখতে তা একশো বছর পেরিয়ে গেল। মিশনের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে জয়রামবাটি মাতৃমন্দির। তিনদিন ধরে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের। দেশ-বিদেশের ভক্ত সমাগমে এখন জয়রামবাটি রীতিমতো গমগম করছে। দম ফেলার ফুরসত নেই মিশনের মহারাজদের।
সারদা মায়ের জীবনের এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায় কেটেছে এই জয়রামবাটিতে। ‘মা গো, তুই যে আমার কে মা! আমি কি তোকে চিনতে পারছি মা?’ জীবন সায়াহ্নে উপস্থিত এক অতুলনীয় মা তাঁর মহীয়সী মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলেন|
উত্তরে মেয়ে খুবই সহজভাবে বললেন, ‘আমি আবার কে? আমি আবার কী? আমার কি চারটে হাত হয়েছে? আর তাই যদি হবে, তবে তোমার কাছে আসা কেন?’
গর্ভধারিনী মায়ের কাছে এভাবেই নিজের অসাধারণত্ব গোপন রেখেছিলেন মা সারদা। সকলের কাছে তিনি পবিত্রতার দৃষ্টান্ত। তিনি পরমাপ্রকৃতি। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সঙ্ঘমাতা। শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ও আমার শক্তি!’ তাঁকে উদ্দেশ করে ভগিনী নিবেদিতা লিখেছিলেন, ‘সত্যিই তুমি ঈশ্বরের অপূর্বতম সৃষ্টি, শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের বিশ্বপ্রেম ধারণের নিজস্ব পাত্র।’
ঈশ্বরের সেই অপূর্বতম সৃষ্টিকে গর্ভে ধারণ করে জগজ্জননীর জননী রূপে যিনি বিশ্বে সমাদৃত, তিনি শ্যামাসুন্দরী দেবী।
জয়রামবাটির কাছে শিহড় গ্রাম। এখানেই হরিপ্রসাদ মজুমদার ও রাইমণি দেবীর সংসারে প্রথম সন্তান হিসেবে ভূমিষ্ঠ হন শ্যামাসুন্দরী। তিনি ছাড়াও হরিপ্রসাদের পাঁচ পুত্র ও একটি কন্যা ছিল। হরিপ্রসাদের পূর্বপুরুষরা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন। কিন্তু তাঁদেরই কেউ একজন বর্ধমানের মহারাজার কাছ থেকে মজুমদার উপাধি পেয়েছিলেন।
শ্যামবর্ণা শ্যামাসুন্দরী ছিলেন অসাধারণ সুন্দরী। অল্প বয়সেই জয়রামবাটির রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। রামচন্দ্র গরিব হলেও নিষ্ঠাবান ও উদারচেতা মানুষ ছিলেন। এমন দু’টি মানুষকে বাবা ও মা হিসেবে পেয়ে গর্বের শেষ ছিল না কন্যা সারদামণির। তিনি বলেছেন, ‘বাবা পরম রামভক্ত ছিলেন, পরোপকারী, মায়ের কত দয়া ছিল! তাই এ ঘরে জন্মেছি।’
সারদামণির জন্মের বৃত্তান্ত যেন অদ্ভুত। এক রাতে শিহড় থেকে জয়রামবাটি ফেরার পথে শ্যামাসুন্দরী অসুস্থ বোধ করেন। একটি বেলগাছের নীচে বিশ্রামের জন্য বসে পড়েন তিনি। সেসময় তিনি দেখেন, লক্ষ্মী সদৃশ এক শিশুকন্যা সেই বেলগাছ থেকে নেমে এসে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরেছে। অন্যদিকে, রামচন্দ্র স্বপ্নে দেখেন, এক অপরূপা সালঙ্কারা বালিকা তাঁকে বলছে, ‘তোমার কাছে এলাম’। তাঁদের অলৌকিক অভিজ্ঞতার পর ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার কৃষ্ণাসপ্তমী তিথির সন্ধ্যায় রামচন্দ্রের গৃহে ভূমিষ্ঠ হন তাঁদের প্রথম সন্তান। প্রথমে সেই শিশুকন্যার নাম রাখা হয় ক্ষেমঙ্করী। পরে শ্যামাসুন্দরীর এক বোনের অকালমৃতা কন্যার স্মৃতিতে ক্ষেমঙ্করীর নাম হয় সারদা।
নিজের গর্ভধারিনী সম্পর্কে শ্রীমা বলতেন, মায়ের কত দয়া ছিল। লোকজনকে কত খাওয়াতেন। যত্ন করতেন। কত সরল! আমার মা সাক্ষাৎ লক্ষ্মী ছিলেন। তিনি বলতেন, আমার ভক্ত-ভগবানের সংসার। সংসার তাঁর প্রাণ ছিল। সংসার সামলাতে তিনি কতই না কষ্ট করেছেন।
১৮৭৪ সালে রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর অথৈ জলে পড়েন শ্যামাসুন্দরী। সংসারে প্রচণ্ড অভাব। ছেলেরা সকলেই নাবালক। শ্রীমা তখন দক্ষিণেশ্বরে। সেই সময় নিঃসম্বল শ্যামাসুন্দরী অন্নসংস্থানের জন্য অবস্থাপন্ন এক প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ধান এনে ঢেঁকিতে কুটতেন। মজুরি হিসেবে পেতেন এক-চতুর্থাংশ চাল। এই দুর্দিনে তিনি পাশে পেয়েছিলেন মেয়েকে। শ্রীমা জয়রামবাটিতে এলে সংসারের সমস্ত কাজ সামলানোর পাশাপাশি ভাইদের দেখাশোনা করতেন। উপার্জনের জন্য খেত থেকে তুলো তুলে তা পাকিয়ে তৈরি করতেন পৈতে। শ্যামাসুন্দরী তাই মেয়েকে বলতেন, প্রকৃতপক্ষে তুই-ই আমার বড় ছেলে। আর ছেলেদের উদ্দেশে বলতেন, তোদের বড়দি আমাদের লক্ষ্মী। আমাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সে কী না করে। অন্তিম সময়ে আদরিনী কন্যার কাছে শ্যামাসুন্দরীর আবদার ছিল, সারদা, জন্মান্তরে তোকেই যেন আবার আমি পাই, মা!
পাঁচ বছরের কন্যা সারদাকে চব্বিশ বছরের গদাধরের হাতে তুলে দেন রামচন্দ্র। কিন্তু জামাই আর পাঁচটা মানুষের মতো নন। তিনি ঈশ্বরপ্রেমে ব্যাকুল হয়ে কাঁদেন, হাসেন, নৃত্য করেন। শ্বশুরবাড়ির কারও চোখে পড়ে বাড়ির জামাই কীর্তন শুনে অচৈতন্য ও বিবস্ত্র অবস্থায় ঘরের এক কোণে পড়ে আছেন। তাঁর ভাব না বুঝে গ্রামের লোকজন তাঁকে মুখুজ্জেদের ক্ষ্যাপা জামাই বলে উপহাস করেন। স্বামীর নিন্দা শুনে লুকিয়ে কাঁদেন সারদা। তা দেখে শ্যামাসুন্দরীর বুক ফাটে আর আক্ষেপ করে বলেন, আহা! কেমন জামাইয়ের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দিলুম! ঘরসংসারও করলে না! ছেলেপিলেও হল না! মা বলাও শুনলে না। কথাটা শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের কানে পৌঁছেছিল। তিনি শাশুড়ি ঠাকরুনকে বলেছিলেন, আপনি দুঃখ করবেন না। আপনার মেয়ের এত ছেলেমেয়ে হবে, শেষে দেখবেন, মা ডাকের জ্বালায় অস্থির হয়ে উঠেছে। শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের দেহত্যাগের কিছুদিন পর থেকেই কথাটা যেন অক্ষরে অক্ষরে খেটে গিয়েছিল। মুখে যাই বলুন না কেন, শ্যামাসুন্দরী জামাইকে খুবই ভালবাসতেন। শ্যামাসুন্দরী যখন বৃদ্ধা, তখন তাঁর মনের অবস্থা বর্ণনা করে শ্রীমা বলেছিলেন, একসময় জামাইয়ের সমালোচনা করলেও এখন মা তাঁকে পুজো করছেন।
মহাসমাধির আগে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ শ্রীমাকে আদেশ দিয়েছিলেন, তুমি কামারপুকুরে থাকবে। শাক-ভাত খাবে আর হরিনাম করবে। দেখো, কারও কাছে একটি পয়সার জন্য চিতহাত করো না। সেই আদেশ পালন করেছেন শ্রীমা। শতচ্ছিন্ন কাপড় গিঁট দিয়ে পরেছেন তিনি। নিজে মাটি কুপিয়ে শাক বুনতেন। রান্নার পর সবদিন নুনটুকুও জুটত না। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও কম হয়নি। এই ষড়যন্ত্রের কারণেই একসময় দক্ষিণেশ্বর থেকে আসা সামান্য মাসোহারাটুকুও বন্ধ হয়ে যায়।
ঠিক হল, জয়রামবাটিতে সারদাদেবীর জন্মস্থানের জমি কেনা হবে। মায়ের সেবক স্বামী সারদানন্দ তিনশো টাকা দিয়ে মায়ের ভাইয়ের কাছ থেকে সেই জমি অধিগ্রহণ করলেন। কিন্তু জমির ঠিক কোন অংশে মায়ের জন্ম হয়েছিল? সেটা নির্ধারণ করতে বেশ সমস্যা দেখা দিল। সারদাদেবী তখন কলকাতায়। তাঁকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানানো হল। উত্তরে মা জানালেন, এক বাগদি বুড়ি তাঁর জন্মের সময় ছিলেন। তিনিই এ বিষয়ে বলতে পারবেন। সেই বুড়ির পরিচয়ও দিলেন মা। সারদাদেবীর ওই চিঠি পাওয়ার পরই সেই বুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হল। তাঁকে ডেকে এনে বকশিস দেওয়া হল ১০ টাকা। তিনি দেখিয়ে দিলেন, কোথায় ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন সারদা। ততদিনে জায়গাটি ভবানী মাসিদের গোয়ালঘর হয়ে গিয়েছে। স্বামী সারদানন্দ তাঁদের কাছ থেকে ওই জমিটি কিনে নিলেন। সেখানেই গড়ে উঠল মাতৃ মন্দির। সেই মন্দিরেরই আজ শতবর্ষ। ১৯২০ সালে মা সারদা মহাসমাধি লাভ করেন। সেই বছর কার্তিক মাসে কিশোরী মহারাজ জয়রামবাটির নতুন বাড়িতে মায়ের পূত অস্থি নিয়ে গিয়ে পুজোর ব্যবস্থা করেন।
১৯২১ সালের ২১ ডিসেম্বর মায়ের জন্মতিথিতে স্মৃতি মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। ভিত খোঁড়ার সময় মাটির নীচ থেকে উদ্ধার হয় একটি শিবলিঙ্গ। সেটি মাতৃমন্দিরে আজও পুজো পাচ্ছে। ১৯২২ সালে মায়ের দুই মন্ত্র শিষ্য রামময় মহারাজ ও কিশোরী মহারাজের প্রচেষ্টায় অক্ষয় তৃতীয়ায় দ্বারোদ্ঘাটন হয় মাতৃমন্দিরের। মার্টিন বার্ন কোম্পানির তত্ত্বাবধানে মন্দিরটি মাটি থেকে গম্বুজ সহ ৪৫ ফুট উঁচু। মন্দিরের উপরের অংশটি বৌদ্ধ ও মুসলিম সংস্কৃতির সংমিশ্রণে তৈরি। তার উপর মা শব্দ লেখা ধাতুর পতাকা। সাদা ধবধবে মন্দিরে বর্গাকৃতি, গর্ভগৃহ ছাড়াও তৈরি হয় মায়ের বিশ্রামঘর। তখন কোনও নাটমন্দির ছিল না। পরবর্তীতে মায়ের জন্মের শতবর্ষে নির্মিত হয় নাটমন্দির ও সরু বারান্দা। রামকৃষ্ণ মঠের তৎকালীন অধ্যক্ষ সারদা মায়ের শ্বেতপাথরের মূর্তি স্থাপন করেন।
তবে প্রথমে গর্ভগৃহে কালো পাথরের বেদীতে একটি তৈলচিত্র স্থাপন করা হয়। মায়ের মন্ত্রশিষ্য ললিতমোহন চট্টোপাধ্যায় ১৯০৮ সালে ইংরেজ শিল্পী স্যামুয়েল হার্টকে দিয়ে ওই ছবিটি আঁকান। মাতৃমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে আনন্দের হাট বসে জয়রামবাটিতে। অক্ষয় তৃতীয়ার আগের দিন স্বামী বিশ্বেশ্রয়ানন্দজী পুজোর বোধন করেন। ষোড়শোপচারে শ্রীগণপতি ও পঞ্চদেবতার পুজো হয়। কাশী থেকে আসা পণ্ডিতরা সপ্তসতী চণ্ডী পাঠ করেন। পরের দিন অক্ষয় তৃতীয়ায় স্বামী সারদানন্দ মায়ের নতুন বাড়ি থেকে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রীমা সারদা ও মা কালীর পটচিত্র এনে নবনির্মিত মন্দিরে স্থাপন করেন। তারপর শ্রীগুরুপুজো, বাস্তুপুজোর পর আবার গণপতি, ব্রহ্মা, সরস্বতী, বিষ্ণু, লক্ষ্মী, শিব, দুর্গা, নবগ্রহ, দশদিকপাল, ষোড়শমাতৃকার পুজো হয়। শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ ও সারদাদেবীর ষোড়শোপচারে বিশেষ পুজোর পর হয় হোম। ভোগ নিবেদনের পর শুরু হয় প্রসাদ বিতরণ। সেই পর্ব চলে রাত প্রায় বারোটা পর্যন্ত।
এমনিতেই সারা বছরই জয়রামবাটিতে নানা অনুষ্ঠান চলতেই থাকে। ভক্তরাও আসেন। মা সারদার জন্মভিটেয় জগদ্ধাত্রী পুজো বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। প্রতি বছর এই পুজো উপলক্ষ্যে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। ইতিহাস বলছে, ১৮৭৭ সালে সারদাদেবীর মা অর্থাৎ শ্যামাসুন্দরী দেবীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠা হয় ওই পুজোর। বর্তমানে রামকৃষ্ণ মিশনই ওই পুজোর দায়িত্বে রয়েছে। প্রথমদিকে জয়রামবাটিতে দুর্গাপুজো হত না। পরে ১৯২৫ সালে ঘট পুজোর মধ্যে দিয়ে দুর্গাপুজো শুরু হয় এখানে। তারও প্রায় ২৭ বছর পর পরে, মাতৃমন্দিরে মাটির প্রতিমা তৈরি করে দুর্গামায়ের বন্দনা শুরু হয়। ফি বছর মহাষ্টমীতে কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয় জয়রামবাটিতে। যা দেখতে বহু দূরদূরান্ত থেকে আসেন ভক্তরা।
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণদেবের ভক্তরা মনে করেন, বৈকুণ্ঠ হতে দেবী লক্ষ্মী পৃথিবীর মাটিতে জয়রামবাটিতে জন্ম নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের আক্ষেপ, বিশ্ব পর্যটনের মানচিত্রে স্থান পাওয়া এই দর্শনীয় স্থান কি আদৌও সেভাবে গড়ে উঠেছে? পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য পরিকাঠামোর অনেক ঘাটতি রয়েছে এখনও।
রামকৃষ্ণদেবের জন্য হুগলি জেলার সীমানা গোঘাটের কামারপুকুর গ্রামে। সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়া জেলার সীমানা জয়রামবাটিতে জন্ম সারদা মায়ের। মাতৃমন্দিরের পাশে এখনও রয়েছে সারদা মায়ের বসতবাড়ি। সুন্দর করে তা আগের চেহারাতেই সাজিয়ে রাখা। দেখা যাবে মায়ের নতুন বাড়িও। মায়ের স্মৃতি বিজড়িত স্নানের ঘাট বাড়ুজ্জে পুকুর, পুণ্যিপুকুর, মায়ের দীঘি, আমোদর ঘাট দেখার মতো। বাড়ুজ্জে পুকুরের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে একটি রাস্তা। সেই রাস্তার পাশে রাধারানি তলার মাঠ। সেখানে বসেই নাকি যাত্রা দেখতেন সারদামণি। ওই পথেই আর একটু এগিয়ে সিংহবাহিনীর মন্দির।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, ওই মন্দিরের মাটির প্রলেপ গায়ে লাগালে নানা রোগব্যাধি সেরে যায়। এখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে শিহড় গ্রামে শান্তিনাথ শিবের মন্দির। এখানে রয়েছে ঠাকুরের ভাগ্নে হৃদয় মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি, শ্রীশ্রী মায়ের জীবদ্দশায় তৈরি সারদা বিদ্যাপীঠ। এখনও রয়েছে এল্লা পুকুরে থাকা সেই বিল্ববৃক্ষ, যেখানে সারদামণির মা শ্যামাসুন্দরী মেয়ের আবির্ভাব বার্তা পেয়েছিলেন। জয়রামবাটি ও তার আশপাশে ছড়িয়ে থাকা নানা দর্শনীয় স্থানের টানেই দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। দৈনিক পর্যটকদের আসা-যাওয়া ছাড়াও দুর্গাপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, মায়ের জন্মতিথি ও অক্ষয় তৃতীয়ার দিন লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় জয়রামবাটিতে।