দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিদির রক্ষাকবচে মন্ত্রীর সামনে অভিযোগ জানানোর অপরাধে এক বাসিন্দার গালে সপাটে চড় তৃণমূল কর্মীর । এই ঘটনায় তোলপাড় উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত বারাসাত ১ ব্লকের ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের সাইবনা গ্রাম।
শনিবার সকাল ১০ টা নাগাদ দিদির রক্ষাকবচ কর্মসূচিতে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ গিয়েছিলেন সাইবনা গ্রামে। রাধামাধবের মন্দিরে পুজো সেরে মন্দিরের চাতালেই বসেন গ্রামবাসীদের অভাব অভিযোগ শুনতে। সেইখানে গ্রামের মহিলা ও পুরুষরা নিকাশি ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট এবং পানীয় জল নিয়ে মন্ত্রীর কাছে অভাব অভিযোগ জানাতে আসেন। অভিযোগ, মন্ত্রীর সামনে গ্রামের এক যুবক সরব হওয়ায় তাঁকে মুখ চেপে ধরে ধাক্কা দিতে দিতে মন্ত্রীর সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে যান তৃণমূল কর্মীরা। চড়ও মারা হয় তাঁকে।
অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমের সামনে আক্রান্ত যুবক যাতে কোনও কথা না বলেন তা নিয়েও ওই তৃণমূল কর্মীরা সাগরকে হুমকি দেন। যদিও পরে সাংবাদিকদের কাছে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরে আক্রান্ত যুবকের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন মন্ত্রী রথীন।
তিনি জানান, বিষয়টা তাঁর চোখের সামনে হয়নি। তবে এমন যদি কিছু ঘটে থাকে তা ঠিক হয়নি। তবে একই সঙ্গে তিনি এটাও বলেন, “এখানে গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। অভাব অভিযোগ শুনেছি। কোনও অসুবিধা হয়নি। নিশ্চই ব্যক্তিগত কোনও অভিসন্ধি ছিল।”
মার খাওয়ার পর ওই যুবক জানান, কী কারণে তার উপর আক্রমণ হল তা বুঝতে পারছেন না তিনি। কারণ তিনিও মন্দির কমিটিরই লোক। তিনি বলেন, “মন্দির লাগোয়া একটি রাস্তার হাল ফেরানো দরকার। মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে সেটাই বলতে গিয়েছিলাম। তখনই আমার উপর চড়াও হয় তৃণমূল কর্মীরা।”
গ্রামবাসীরাও এই মারধরের ঘটনাকে অন্য চোখে দেখছেন। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন যাবত পঞ্চায়েত এমনকি বিডিওকে জানিয়েও এলাকার রাস্তাঘাট ও নিকাশি ব্যবস্থার কোনও উন্নয়ন হয়নি। তাই মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে অভিযোগ জানাতে আসেন। আর সেখানেই বাধে বিপত্তি।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোট সামনে রেখে ডাকা দলীয় সভায় বাংলার ১০ কোটি মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানানো হয়, এই কর্মসূচির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন ‘দিদির দূত’।
এ-ও ঘোষণা করা হয় যে, এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হবে বাংলার ১০ কোটি মানুষ এবং ২ কোটি বাড়ির সমস্যা, অভাব, অভিযোগের কথা দলের শীর্ষ স্তরে, এমনকি নেত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া। আর তাই এই কর্মযজ্ঞের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’। অভিষেকের করা ঘোষণা অনুসারে গত কয়েক দিনে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে সারা বাংলার বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় ‘দূত’ শতাব্দী রায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়দের। তবে অভিযোগ জানাতে গিয়ে ‘দূত’-এর সামনেই তৃণমূল কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার এই প্রথম কোনও ঘটনা প্রকাশ্যে এল ৷