দেশের সময় ,কলকাতা: রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছিলেন, “হাইকোর্ট যদি রাজ্য প্রশাসনের হাত বেঁধে দেয়, তাহলে গ্রেপ্তার করবেন কীভাবে?” ঠিক তার পরের দিন, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সন্দেশখালি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় শেখ শাহজাহানকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিল। প্রয়োজনে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে। গ্রেফতারের উপর কোনও অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ নেই বলে জানালেন প্রধান বিচারপতি।
শাহজাহানের গ্রেফতার না হওয়ার বিষয়ে আদালতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার তিনি বলেছিলেন, “শাহজাহানকে কেউ যদি গার্ড করে থাকে তাহলে তা আদালত। হাইকোর্ট হাত-পা বেঁধে দিলে পুলিশ কী করবে?” সোমবার সেই তত্ত্ব কার্যত খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি বললেন, মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে আদালত কোনও দিনও কোনও রকম স্থগিতাদেশ দেয়নি। এছাড়াও এই মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করার জন্য সংবাদমাধ্যমে পাবলিক নোটিশ জারি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত দাবি করেন, ওই এলাকায় গত চার বছর ধরে যৌন নিগ্রহের মোট ৪৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। সেগুলির মধ্যে ৪৭টি মামলায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট দেওয়া হয়ে গিয়েছে বাকি মামলাগুলির তদন্ত চলছে। পাশাপাশি জানান হয়েছে, জমি কেড়ে নেওয়ার মোট ২৪টি এফআইআর রুজু করেছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ। বিষয়টি শোনার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। বলেন এটা খুব বিস্ময়কর যে, চার বছর ধরে রাজ্য পুলিশ সবই জানত। অথচ ব্যবস্থা নিতে এত সময় লেগে গেল।
এই প্রেক্ষিতেই আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাবে না, এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি হাইকোর্ট। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল শুধু। রবিবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ শাহজাহানের গ্রেফতার প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছিলেন তারপর আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি সে অপরাধী হয় তাহলে পুলিশের গ্রেফতারের কোনও বাধা নেই। আগামী ৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
রবিবার সন্দেশখালি ও শেখ শাহজাহান নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্ফোরক দাবি করে বলেছিলেন, ‘তৃণমূল এমন একটা দল যারা পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেয়াত করে না, তাহলে কে শেখ শাহজাহান? তাই শাহজাহানকে তৃণমূল গার্ড করছে না। যদি কেউ গার্ড করে থাকে তা হল বিচার ব্যবস্থা, যাতে রোজ সন্দেশখালি শিরোনামে থাকে।” সঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, বিজেপিকে ফুটেজ দেওয়ার জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।