টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব (সিপিভি-ওআইএ) মুক্তেশ পরদেশি। তিন দিনের ভারত সফর শেষে আগামী ১০ জুন সোমবার রাতে হাসিনার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
এদিকে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটা শেখ হাসিনার সঙ্গেই করবেন নরেন্দ্র মোদী, এমনটাই জানা গেছে কূটনৈতিক সূত্রে৷ আগামী ১০ জুন সোমবার হায়দরাবাদ হাউসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা৷ এছাড়াও ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন হাসিনা৷
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও নতুন মন্ত্রিসভার মূল শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেবেন। এ ছাড়া শপথ অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।”
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির একান্ত বৈঠকের আলোচনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। এরই অংশ হিসেবে শেখ হাসিনার পরিকল্পিত দ্বিপক্ষীয় সফরের বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। যেহেতু আগামী মাস দেড়েকের মধ্যে শেখ হাসিনার ভারত ও চীন সফরের কথা রয়েছে। স্বভাবতই দিল্লির সফরটি কখন হতে পারে, তা নিয়ে তাঁদের কথা হবে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আধা ঘণ্টার মতো বৈঠক হতে পারে। সেখানে আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের কোথায় কোথায় অগ্রাধিকার থাকবে, সেই বিষয়গুলো দুই প্রধানমন্ত্রী তুলতে পারেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যু, বিশেষ করে তিস্তা ও গঙ্গার মতো বিষয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মতো বিষয়সহ বাণিজ্য ও সংযুক্তির বিষয়গুলো আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বাগেরহাটের মোংলা বন্দর ভারতের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহারের পদক্ষেপের বিষয়টি তুলতে পারে দিল্লি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত দিল্লি সফরের বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানান, “এই সফর (শপথ অনুষ্ঠানে যোগদান) তো অনেকটা আনুষ্ঠানিকতা। এর মাধ্যমে একটি দ্বিপক্ষীয় সফর আয়োজনের জন্য কাজ করছি আমরা। আমাদের সেই সফরের সময়সূচি পুনরায় নির্ধারণের জন্য কাজ করবো। ওই সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের কথা আছে। বেশ কিছু বিষয় ঘোষণার কথাও রয়েছে।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, ভারতেও এখন নতুন সরকার গঠিত হবে। তাই দুই দেশের সম্পর্কের ধারাবাহিকতা থাকবে। তবে আমরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ দেখতে পাব বলে আশা করছি।”