বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশ ও জনগণের জন্য যে প্রস্তাব সবচেয়ে বেশি লাভজনক তা গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তিস্তা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভারত ও চীন আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের দেশের জনগণের জন্য কোন প্রস্তাবটি অধিক লাভজনক ও উপযোগী হবে সেটাই আমরা গ্রহণ করবো।’
শেখ হাসিনা ২৫ জুন মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক দ্বিপাক্ষিক ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে চীন আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতও দিয়েছে। আরও প্রস্তাব এসেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিবেচনা করবো, কোন প্রস্তাবটি গ্রহণ করলে তা আমার দেশের মানুষের কল্যাণে আসবে সেটাই আমি গ্রহণ করবো। কোন প্রস্তাবটা নিলে কতটুকু ঋণ নিলাম এবং কতটুকু আমাদের পরিশোধ করতে হবে, কতটুকু দিতে পারবো -এসব কিছু বিবেচনা করেই তো আমাদের পরিকল্পনা নিতে হবে।’
হাসিনা আরও বলেন, ‘সেক্ষেত্রে ভারত যেহেতু বলেছে তারা করতে চায় এবং টেকনিক্যাল গ্রুপ বানাবে, তারা অবশ্যই আসবে। আমরা যৌথভাবে সেটা দেখবো। চীন একটা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ভারতও একটা করবে এবং এটার পর আমাদের কাছে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রহণযোগ্য ও লাভজনক মনে হবে আমরা সেটাই করবো।’
হাসিনার বক্তব্য, ‘যেহেতু ভারতের কাছে আমাদের তিস্তার পানির দাবিটা অনেক দিনের সেক্ষেত্রে ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রকল্পটি করে দেয় তবে আমাদের সব সমস্যারই সামাধান হয়ে যায়। তাহলে সেটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে সহজ হলো৷ আপনারা নিজেরাই বিবেচনা করে দেখেন।’
তিনি বলেন, ‘কাজেই ভারত যখন এগিয়ে এসেছে আমরা এটাই মনে করি যে ভারতের সাথে যদি আমরা এই তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করি তাহলে আমার দেশের পানি নিয়ে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হবে না৷ আমরা সেই সুবিধাটা পাব।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এর প্রসঙ্গ টেনে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমিতো এখানে কোন সমস্যা দেখি না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন আমাকে তার শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার দাওয়াত দিলেন, আমরা গেলাম। তারপর তিনি রাষ্ট্রীয় সফরের দাওয়াত দিলেন, সে সফরও করে আসলাম। চীন আমাকে দাওয়াত দিয়েছে আমি চীনে যাব। আমার বাংলাদেশ সার্বভৌম দেশ এবং সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়েই আমি চলবো। কার কি সমস্যা সেটা তাদের সঙ্গে থাক আমার নয়, আমার দেশের মানুষের কতটুকু উন্নতি করতে পারি সেটাই আমার লক্ষ্য।’
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ২১ ও ২২ জুন নয়াদিল্লি সফর করেন। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার পর ভারতে কোনো সরকার প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর ছিল। এ ছাড়াও এই সফরটি ছিল ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর। কারণ, গত ৯ জুন টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসিনা৷