দু’টি ভিন্ন বিমান দুর্ঘটনা। মাঝে সময়ের ব্যবধান ২৭ বছর। কিন্তু বেঁচে ফেরা দুই জনই বসেছিলেন একই আসনে, ১১এ (Seat 11A)। সেই 11A, রমেশের মতোই ২৭ বছর আগে ‘বিস্ময় সার্ভাইভার’ ছিলেন গায়ক-অভিনেতা থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ।
দু’টি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, দুই বেঁচে ফেরায় অদ্ভুত মিল! নেপথ্যে সেই ‘মিরাকল সিট’

এয়ার ইন্ডিয়ার 11A নম্বর সিটে বসেছিলেন রমেশ বিশ্বাসকুমার। বৃহস্পতিবার ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে AI171। ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে বেঁচে যান রমেশ। তীব্র ধাক্কায় তাঁর সিট ছিটকে বেরিয়ে গিয়েছিল।

২৭ বছর আগে ফিরে যাওয়া যাক। ১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর। থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় অভিনেতা এবং গায়ক রুয়াংসাক লয়চুসাকের বয়স তখন ২০ বছর। থাই এয়ারওয়েজের TG261 বিমানে ছিলেন তিনি। সেই বিমান ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ১৪৬ জন যাত্রী ছিলেন। ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বেঁচে গিয়েছিলেন রুয়াংসাক। তাঁর সিট নম্বরও ছিল 11A।

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। একসঙ্গে এত প্রাণ চলে গেল! এ যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। তবে রমেশের বেঁচে যাওয়াটা মিরাক্যালের চেয়ে কম কিছু নয়।

তাঁর খবর শুনেছেন রুয়াংসাক। জেনেছেন, 11A সিটে বসেছিলেন রমেশ। সেই নম্বরের সিটই তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছে। এটা জানার পর শিউরে উঠেছেন রুয়াংসাক। এমনও হয়! তাঁর সিট নম্বরও যে 11A-ই ছিল। তিনিও যে কাকতালীয়ভাবেই বেঁচেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনার কথাই জানিয়েছেন থাই শিল্পী।

রুয়াংসাকের ফেসবুক পোস্টে বিস্ময় ঝরে পড়ছে, ‘ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত ব্যক্তি রমেশ। ২৭ বছর আগে দুর্ঘটনার দিন বিমানে আমি যে সিটে বসেছিলাম, তিনিও একই সিটে বসেছিলেন।11A।’ এই পোস্ট ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। তার পর থেকেই এই সিট নম্বর নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। রুয়াংসাক জানিয়েছেন, তিনি দ্বিতীয় জীবন পেয়েছেন। রমেশও তাই। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন তিনি।
বছর আটত্রিশের রমেশ ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক। এয়ার ইন্ডিয়ার AI-171 বিমানের ১১এ আসনে বসেছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তাঁর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যাচ্ছে, হেঁটে অ্যাম্বুল্যান্সে উঠছেন রমেশ। তাঁর সাদা টি-শার্টে রক্তের দাগ। কিছুটা খোঁড়াচ্ছেন তিনি।
আমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালের বেডে শুয়ে রমেশ চিকিৎসকদের বলেছেন, ‘বিমান ভেঙে পড়ার সময় আমার প্রচণ্ড ধাক্কায় আমার সিট ছিটকে বেরিয়ে যায়। আর তাতেই বেঁচে যাই।’ রমেশের সিট বেল্ট বাঁধা ছিল। সিটে বসে থাকা অবস্থাতেই ছিটকে বেরিয়ে যান তিনি।

এই অলৌকিক বেঁচে ফেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। সাধারণত এই সিট কেউ নিতে চান না, কিন্তু অনেকেই এখন টিকিট কাটার সময় ১১এ সিটটি খুঁজে নিচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন ‘এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান আসন।’