Sandip Ghoshআরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসিকে গ্রেফতার করল সিবিআই

0
248

দেশের সময় ওয়েবডেস্ক :  আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসিকে শনিবার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করল সিবিআই।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় এ বার গ্রেফতার হলেন ওই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আগেই ওই হাসপাতালের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের হাতে পাকড়াও হয়েছিলেন সন্দীপ। এ বার সন্দীপকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলাতেও গ্রেফতার করা হল। এরই পাশাপাশি গ্রেফতার হয়েছেন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল।

আগেই চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। তিনি এখন সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন। শনিবার ওই মামলায় গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল তিন।

তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দেরিতে এফআইআর রুজু করার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। সিবিআই সূত্রে খবর, টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎকে রবিবার সকালে আদালতে হাজির করানো হবে। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে। তাই তাঁকেও রবিবারই আদালতে হাজির করানো হবে।

উল্লেখ্য, আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার সন্দীপের পৈতৃক বাড়ি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ওষুধ ব্যবসায়ীদের অফিসে, বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। ওই মামলায় আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে সন্দীপের। তিনি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।

গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় এক যুবতী চিকিৎসকের দেহ। প্রথমে আত্মহত্যা বলা হলেও পরে উঠে আসে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ। তার মধ্যেই হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের একটি মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বস্তুত, চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই তৎকালীন অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে নানা মহলে।

অন্য দিকে, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ ‘অসুস্থ’ বলে দাবি করে গত ৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সিবিআইয়ের একটি সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে যান। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখা যায়। তার পরেই তিনি গ্রেফতার হন বলে খবর। টালা থানার প্রাক্তন ওসি-র বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পর অভিযোগ দায়ের থেকে ময়নাতদন্ত, একাধিক ক্ষেত্রে অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর ‘গায়েব’ করার অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির ৭২ ঘণ্টা আগে এই ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁকে টানা ১৬ দিন ধরে জেরা করার পর গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। সন্দীপকে ঘোষকে হেফাজতে নিয়েও জেরা করা হয়। তার পর আদালতের নির্দেশে এখন জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সূত্রের খবর, আরজি কর হাসপাতালে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রমান লোপাটের অভিযোগে সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই একই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে টালা থানার ওসিকে।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করার সিবিআইয়ের। গত সোমবার তারা এক প্রস্ত স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করেছিল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সেই রিপোর্ট পড়ে বলেন, সিবিআই তাদের তদন্তের লাইন জানিয়েছে। আদালতে খোলাখুলি তা নিয়ে আলোচনা করা ঠিক হবে না। তবে সিবিআইকে বলছি সাত দিনের মধ্যে আরও একটি রিপোর্ট দিক। 
সর্বোচ্চ আদালতের সেই পর্যবেক্ষণ দেখে মনে করা হচ্ছিল, সিবিআই যে পথে তদন্ত এগোচ্ছে তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই সুপ্রিম কোর্টের। অর্থাৎ স্পষ্ট কোনও ইঙ্গিত সিবিআই দিয়েছে।

আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল, সিবিআইয়ের প্রাথমিক রিপোর্ট পড়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিবালকে বার বার এই প্রশ্ন করেন যে, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার রাতের গোটা সিসিটিভি ফুটেজ কি সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে? ময়নাতদন্তের চালান কোথায়? 

এ ছাড়া ফরেনসিক রিপোর্ট কতটা ভরসাযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সলিসটির জেনারেল তুষার মেটা। সেই সঙ্গে আইনজীবীরা এ প্রশ্নও তুলেছিলেন যে ময়নাতদন্তের পর নমুনা সংগ্রহ কি ঠিকঠাক ভাবে করা হয়েছে?

অনেকের মতে, সলিসিটির জেনারেলের এই সব কথাতেই পরিষ্কার ছিল যে সিবিআই তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আনতে পারে। দেখা গেল হলও তাই। টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা সেদিক থেকে বড় ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে।

Previous articleDoctors protest আরজিকর: মমতার অনুরোধ ব্যর্থ , স্নায়ুর লড়াইয়ে অধরা কালীঘাটের বৈঠক : দেখুন ভিডিও
Next articleRGKar Case ‘আরজি করে প্রমাণ লোপাটে পুলিশ সরাসরি যুক্ত এটাই প্রমাণ হয়’, টালা থানার ওসি গ্রেফতার নিয়ে মন্তব্য শুভেন্দুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here