দেশের সময়, কলকাতা: আরও বিপদ বাড়ল আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। সিবিআইকে আরজি করের যাবতীয় দুর্নীতির তদন্ত ভার দিল হাইকোর্ট। এবার ডেপুটি সুপার আখতার আলির মামলায় সিবিআই তদন্ত করবে। যেহেতু আরজি করের এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে তদন্ত করছে সিবিআই, তাই এই তদন্তভার তাদের হাতে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে তদন্ত নথি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত হবে।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টরই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার দুপুরে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের কপিও আনতে বলেছে।
শুক্রবার দুপুরেই সন্দীপের বিরুদ্ধে ওই দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সন্দীপের আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ। অথচ তাঁর কথা না শুনেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে দ্রুত শুনানির আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি একাধিক অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে একটি করেছেন সন্দীপের প্রাক্তন সহকর্মী তথা আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। অন্য মামলাটি করেন আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত। এর মধ্যে আখতারের মামলাটিই উঠেছিল বিচারপতি ভরদ্বাজের বেঞ্চে।
আখতার আলি বহুবার সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। আরজি করে ছাত্রী খুনের ঘটনা নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য, বারবার সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে শাসকদলকে। সেই আবহে আখতার আলি আরও একবার আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন। টালা থানায় আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। দু’দিন আগে এই সমস্ত অভিযোগকে সামনে রেখেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আখতার আলি। সেই মামলারই শুনানি ছিল শুক্রবার।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আখতার আলির অভিযোগ, ইএনটি কর্মশালায় বেআইনিভাবে মৃতদেহের ব্যবহার করেছিলেন সন্দীপ ঘোষ। যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। এছাড়াও বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য পাচার, ল্যাব পরিকাঠামোয় আর্থিক দুর্নীতি, বাজারমূল্যের বেশি দামে অক্সিজেনযন্ত্র ক্রয়ের মতো একাধিক অভিযোগ উঠেছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি, ইউজি-পিজি কাউন্সেলিংয়ে বেনিয়মের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে।
এই মামলায় এসআইটি গঠন করে তদন্তভার ন্যস্ত করেছিল রাজ্য। এই এসআইটি নিয়ে বৃহস্পতিবারের শুনানিতেই প্রশ্ন ওঠে। আদালত জানতে চায়, কেন ১৬ অগস্ট সিট গঠন হল? কেন ২০২৩ সালের অভিযোগের পরে তা গঠন হল না?