দেশের সময় কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডের তদন্তে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার নিয়ে পরপর সাতবার তাঁকে ডাকা হয়েছিল। এবার আরজি কর হাসপাতালের সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে শিয়ালদহ আদালতে গেল সিবিআই। তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছে। সন্দীপ ছাড়াও আরও পাঁচ জনের পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আরজি কর হাসপাতালের চার জন চিকিৎসক পড়ুয়া। এ ছাড়া, আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের এক ঘনিষ্ঠের পলিগ্রাফ পরীক্ষাও করতে চেয়েছেন গোয়েন্দারা।
উল্লেখ্য, যার পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানানো হচ্ছে, তাঁর সম্মতি ছাড়া ওই পরীক্ষা করা যায় না। পলিগ্রাফ পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য আদালতে প্রমাণ হিসাবেও গ্রাহ্য হয় না। এতে তদন্ত সুবিধা হয় মাত্র। সেই প্রক্রিয়ার আবেদন সিবিআই জানিয়েছে শিয়ালদহ আদালতে।
এই ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতি আগেই পেয়েছে সিবিআই। তবে সেই টেস্ট এখনও করাতে পারেনি তাঁরা। এবার সন্দীপ ঘোষ এবং আরজি করের চার চিকিৎসক পড়ুয়াকে আদালতে নিয়ে যাওয়ায় জল্পনা বেড়েছিল। মনেই করা হয়েছিল তাঁদের পলিগ্রাফ টেস্টের জন্যই অনুমতি চাওয়া হবে। সেটাই সত্যি হল। সন্দীপ ঘোষ সহ ৬ জনের পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন করেছিল সিবিআই। শুক্রবার সকালে হবে তাঁদের টেস্ট। অনুমতি দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত।
সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্ট এখনও পর্যন্ত না হওয়ায় সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার আরজি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে এই টেস্ট করাতে হবে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “২৩ অগস্ট বিকেল ৫টার মধ্যে শিয়ালদহ কোর্টের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দিতে হবে।”
বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে সিবিআইকে সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আরজি করে গণধর্ষণ হয়নি। সঞ্জয় রায়ই একাই ধর্ষণ ও খুন করেছে। সেদিক থেকে সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্ট করা জরুরি বিষয়। কারণ, সে কোনও তথ্য লুকোচ্ছে কিনা, সত্যি কথা বলছে কিনা তা জানা দরকার।
পলিগ্রাফ টেস্টের মাধ্যমে বোঝা যায়, যে কেউ মিথ্যা বলছে কিনা। সঞ্জয় রায়ের এই টেস্ট করলে জানা যেতে পারে, ওই দিন ঘটনার সময়ে সে ঠিক কী কী করেছিল, তার সঙ্গে আর কেউ ছিল কিনা এবং আরও নানা তথ্য। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কারও পলিগ্রাফ টেস্ট বা পরীক্ষার মাধ্যমে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি, নাড়ির স্পন্দন তথা গতি, রক্ত চাপ, শরীর থেকে কতটা ঘাম বেরোচ্ছে ইত্যাদি দেখা হয়। কেউ মিথ্যা কথা বললে তার হৃৎস্পন্দন এবং রক্তচাপের পরিবর্তন ঘটে। তার মাধ্যমেই একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়।