দেশের সময় ,ওয়েবডেস্ক : সন্দেশখালির বাস্তব চিত্র খতিয়ে দেখতে গ্রামে পৌঁছলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। ধামাখালি থেকে লঞ্চে চেপে জলপথে তিনি আসেন সন্দেশখালিতে। সঙ্গে রয়েছেন এডিজি (সাউথ বেঙ্গল) সুপ্রতীম সরকার ও বসিরহাট পুলিশ জেলার এসপি হোসেন মেহেদি রহমান।
সূত্রের খবর, নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে সন্দেশখালি থানায় বৈঠক করবেন ডিজি। সেখান থেকে তিনি কিছু গ্রামে যেতে পারেন বলেও খবর। তবে কোন কোন এলাকায় ডিজি যাবেন, তা নিশ্চিত করে এখনও জানা যায়নি।
বুধবার দুপুরে ধামাখালি থেকে লঞ্চে করে সন্দেশখালিতে পৌঁছন ডিজি-সহ পদস্থ পুলিশ কর্তারা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতেও ডিজির এই সফর। তিনি কথা বলতে পারেন এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গেও।
গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। তবে বুধবার সকাল থেকে নতুন করে কোনও গোলমালের খবর নেই।
সন্দেশখালির ফেরার তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধে মহিলাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। তারপর থেকে সামনে এসেছে একের পর এক অভিযোগ। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন একাংশ গ্রামবাসী। সম্প্রতি অভিযোগের ভিত্তিতে শিবু এবং উত্তমের বিরুদ্ধে গণ ধর্ষণের অভিযোগও আনে পুলিশ। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেফতারও করেছে জেলা পুলিশ।
তবে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান এখনও ফেরার। শাহজাহানকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না. সম্প্রতি সেই প্রশ্নও ওঠে। তবে এ ব্যাপারে সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক থেকে ডিজি রাজীব কুমার সাফ জানিয়েছিলেন, ”শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডি অভিযোগ দায়ের করেছে। তাহলে ইডি কেন তাঁকে গ্রেফতার করেনি?” একইসঙ্গে সন্দেশখালিতে যে কোনও রকম অভিযোগ পেলে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন ইডি।
নারী নির্যাতনের ভয়ঙ্কর অভিযোগকে সামনে রেখে সম্প্রতি সন্দেশখালি সফরে যায় জাতীয় মহিলা কমিশন, শিশু সুরক্ষা কমিশন-সহ একাধিক প্রতিনিধি দল। বিজেপি, কংগ্রেস-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পাল্টা হিসেবে তৃণমূলের দাবি, ভোটের মুখে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগকে ঘিরে ক্রমেই তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি।
সরস্বতী পুজোর দিন সন্দেশখালি যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্তর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় রাজ্যের মুখ্য সচিব, ডিজি-সহ রাজ্য পুলিশের পাঁচ কর্তাকে তলব করে সংসদীয় অধিকার রক্ষা কমিটি। কমিটির এই হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন।
এরই মাঝে এবার সন্দেশখালিতে পৌঁছলেন ডিজি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন তিনি। আইনের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতেই ডিজি-র এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে এখনও বেশ কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি বসানো রয়েছে। জাতীয় তফসিলি কমিশনের তরফে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জোরদার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজির সন্দেশখালিতে সরেজমিনে বাস্তব চিত্র পরিদর্শনে আসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।