দেশের সময় কলকাতা সন্দেশখালি নিয়ে একাধিক ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। আর প্রত্যেকটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরই চাপ বেড়েছে বিজেপির। কারণ প্রথম যে ভিডিও ভাইরাল হয় তাতে স্থানীয় বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে দেখা গেছিল। ভিডিওতে তিনি দাবি করেছিলেন, টাকা দিয়ে মহিলাদের অভিযোগ করানো হয়েছে।
তার ভাইরাল হওয়া ভিডিও ঘিরেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিতে। এবার ভিডিও ভুয়ো এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সন্দেশখালির বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল।
যে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তা সবই ভুয়ো। আরও ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল করার চেষ্টা চলছে! এমন দাবি করেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে তাঁর আবেদন, তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হোক। কারণ ভুয়ো ভিডিওর জন্য এলাকায় উত্তেজনা বাড়ছে। সিবিআই-এর কাছেও এই নিয়ে আবেদন করেছেন তিনি। আদালত তাঁর আবেদন গ্রহণ করেছে এবং আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।
গত শনিবার সন্দেশখালি নিয়ে প্রথম ভিডিও সামনে এসেছিল। সেখানেই বিজেপি নেতা গঙ্গাধরকে বলতে শোনা গেছিল, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন অভিযোগকারী মহিলাদের। সন্দেশখালির ঘটনা পুরোটাই সাজানো। ২০০০ টাকা দিয়ে তাদের ভুয়ো অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় রাজ্যে। তবে এই একটি নয়, সন্দেশখালি নিয়ে আরও কয়েকটি ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
অন্য একটি ভাইরাল ভিডিওতে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করা নির্যাতিতাদের পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। পাশাপাশি আর একটি ভিডিওতে এক মহিলাকে বলতে শোনা গেছে, সাদা কাগজে সই করিয়ে পরে সেখানে ধর্ষণের অভিযোগ লেখা হয়েছিল। গোটা ঘটনায় সন্দেশখালি থানায় মামলা দায়ের হয়েছে গঙ্গাধর কয়াল, রেখা পাত্র সহ একাধিক স্থানীয় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ লেখানো হয়েছিল বলে যে মহিলা দাবি করেছেন, তিনিই বলেছেন এই কাজ তাঁকে দিয়ে করিয়েছিলেন মাম্পি দাস, যিনি সন্দেশখালির আন্দোলনের অন্যতম মুখ। তাঁকেও তলব করেছে পুলিশ। তিন দিনের মধ্যে সন্দেশখালি থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। জানা গেছে, তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হবে। যদিও বিজেপি দাবি করছে, তৃণমূল ভুয়ো ভিডিও তৈরি করে সন্দেশখালি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ কমানোর চেষ্টায় রয়েছে।
প্রসঙ্গত গঙ্গাধর কয়াল চর্চায় আসে গত শনিবার। আচমকা প্রকাশ্যে আসে একটি স্টিং ভিডিও। ভিডিওতে বিজেপি নেতা গঙ্গাধরকে বলতে শোনা গিয়েছিল সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো। এমকি তাকে বলতে শোনা যায়, টাকার বিনিময়ে মহিলারা তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতনের মতো বিস্ফোরক অভিযোগ দায়ের করেছে, সেগুলি ভুয়ো বলে দাবি করেন গঙ্গাধর।
উঠে আসে শুভেন্দু অধিকারীর নামও। যদিও দেশের সময় এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। গঙ্গাধরের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপি ক্রমাগত ভুয়ো ভিডিও এবং চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে। যদিও তার পরেও গত কয়েকদিনে প্রকাশ্যে এসেছে আর দুটি ভিডিও।