দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ ভারত কখনও কেপটাউনে জেতেনি। শুধু তাই নয়, এশিয়ার কোনও টিমই কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি! দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্গ কেপটাউন। এ বার সেখানে জিতে ইতিহাস ভারতের। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে যেমন ব্রিসবেন দুর্গ ভেঙেছিল তরুণ ভারত। কেপটাউনে তরুণ-অভিজ্ঞতার মিশেলে দেড় দিনেই জয়। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ৩২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে দেড়দিনেই জয় রোহিতদের। ভারতের সামনে লক্ষ্য ছিল ৭৯ রান। আর সেটা সহজেই করল টিম ইন্ডিয়া। দেড় দিনে শেষ হল ম্যাচ। আর ভারত জিতল ৭ উইকেটে।
একেই বলে মধুর প্রতিশোধ। সিরিজের প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ও ৩২ রানে জিতেছিল। ভারতীয় দল দ্বিতীয় টেস্টে দারুণভাবে ফিরে এল। রোহিত শর্মার দল জিতল সাত উইকেটে।
দু’দিনেই খেলা শেষ হয়ে যাবে, সেটি ভাবা গিয়েছিল বৃহস্পতিবার সকালেই। জশপ্রীত বুমরার দাপটে প্রোটিয়া বাহিনী শেষ হয়ে গিয়েছিল ১৭৬ রানে। বুমরা পেয়েছিলেন ছয় উইকেট। প্রথম ইনিংসে মহম্মদ সিরাজ পান ছয় উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে বুমরাও একইভাবে বিপক্ষ দলকে তছনছ করে দিয়েছেন।
মাত্র ৭৯ রানের লিড ছিল ঘরের দলের। সেই রান তুলতে বেশি অসুবিধে হয়নি রোহিতদের। ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল ২৩ বলে ২৮ রান করে ফিরে গেলেও রোহিত ও কোহলি মিলে আরও এগিয়ে দেন দলকে। তিনে নামা শুভমন গিলও ফিরেছেন রাবাদার বলে।
দুই তরুণ ব্যাটার আউট হয়ে যেতে ভারতের জয়ের রান এল দুই সিনিয়র তারকার ব্যাট থেকে। রোহিত তো আগে থেকেই খেলছিলেন, কোহলি এসে জয়ের মঞ্চকে রাঙিয়ে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনিও আউট হয়ে গেলেন শেষমেশ জানসেনের বলে।
বছরের শুরুতে রোহিতদের জয়ে আশার ঝিলিক। কেপটাউন টেস্ট স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এই ম্যাচ ছিল বোলারদের। বিশেষ করে দু’দলের পেসাররা ছড়ি ঘোরালেন। সিরাজ ও বুমরা দু’জনেই ধ্বংস করে দিয়েছেন বিপক্ষকে। এমনকী দেড়দিনে ম্যাচে মোট ৩৩টি উইকেট পড়েছে। ৩৫ ঘণ্টার খেলা শেষ মাত্র ন’ঘণ্টায়।
এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট কেপটাউনের নিউল্যান্ডস স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৫ রানে অলআউট হয়ে যাওয়াই। ওই বোলিং ইনিংসে সিরাজ ছয় উইকেট নিয়েছিলেন ১৫ রানে, সেখানেই কার্যত ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
ভারতীয় দলের ব্যাটিং ব্যর্থতাও আড়াল করা যাবে না। কারণ ভারত প্রথম ইনিংসে ১২৩ রান থেকে নিমেষে ১৫৩ রানে শেষ হয়ে যায়। ভারতের ছয় ব্যাটার শূন্য রানে ফিরে যান। মুকেশ কুমার শূন্য করলেও অপরাজিত থাকেন।
দ্বিতীয় ইনিংসেও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা ব্যর্থই। এডেন মাক্রাম একক প্রচেষ্টায় দলকে বড় লজ্জা থেকে বাঁচান। দক্ষিণ আফ্রিকা করে ১৭৬, যার মধ্যে ১০৬ রানই মাক্রামের। বাকিরা ব্যাটাররা কেউ ১৩ রানও করতে পারেননি।
দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের ইনিংসে ধ্বস নামিয়েছেন বুমরা। ভারতের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৭৯ রানের। তবে এই রান তুলতেও বেশ ঘাম ঝরেছে ভারতের।
জয়সোয়াল ২৩ বলে ২৮, শুভমন গিল ১১ বলে ১০ এবং বিরাট কোহলি আউট হন ১১ বলে ১২ করে।
১৬ রানে অপরাজিত থাকলেও রোহিত ক্যাচ দিয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানেই শেষ ৬ উইকেট হারায় ভারত। ফলে রোহিতের ক্যাচটা ড্রপ না হলে ম্যাচে আরও রোমাঞ্চ ছড়াতে পারত।