দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত সোমবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৪৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা হয়ে গেল। এই মুহূর্তে RIL বাজার-মূলধনের দিক থেকে ভারতের বৃহত্তম সংস্থা ৷ এই সভায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি। বিনিয়োগকারী এবং বিশ্লেষকরা এই অনুষ্ঠান টি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করেছেন।
২০২১ সালে অনুষ্ঠিত AGM-এ, ‘গ্রিন এনার্জি’ বিষয়ে ঘোষণা করা হয়েছিল। তার আগে ২০২০ সালে, লঘু বিনিয়োগকারী হিসেবে Google-এর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এ দিনের সভায় মুকেশ আম্বানি ঘোষণা করেন, আগামী অক্টোবরের মধ্যেই কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি-সহ অন্য সমস্ত মেট্রো শহরেই 5G পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। এ জন্য তিনি দীপাবলি পর্যন্ত সময় নিতে চেয়েছেন।
Meta, Google, Microsoft, Erikson, Nokia, Samsung-এর কথা উল্লেখ করে মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া 5G-র সহযোগিতায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলিকে অংশীদার হিসেবে পেয়ে আমরা নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছি ৷ আজ, সোমবার কোয়ালকমের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বের কথা ঘোষণা করছি।’
শুধু নতুন প্রযুক্তির কথাই নয়, RIL এ দেশে কর্ম সংস্থান তৈরিতেও একটি নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে বলে দাবি করেন সংস্থার কর্ণধার। তাঁদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রায় ২.৩২ লক্ষ চাকরি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান। আম্বানি বলেন, ‘রিলায়েন্স রিটেল এখন ভারতের বৃহত্তম নিয়োগকর্তাদের মধ্যে একটি।’
রিলায়েন্সের রফতানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের বার্ষিক পণ্য রফতানির প্রায় ৮.৪ শতাংশ তাঁদের হাতে রয়েছে বলে দাবি করেন মুকেশ। যা গত বছরের ৬.৮ শতাংশ বেশি।
আম্বানি আরও জানান, তাঁরা দেশীয় ভাবে একটি ‘এন্ড-টু-এন্ড 5G স্ট্যাক’ তৈরি করেছেন, যা সম্পূর্ণরূপে ক্লাউড নেটিভ, সফ্টওয়্যার ডিএনড, ডিজিটাল ভাবে পরিচালিত, এমনকী কোয়ান্টাম সিকিউরিটির মতো উন্নত বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য সহায়ক।
তিনি ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘এ সব সম্ভব হয়েছে আমাদের দু’হাজারেরও বেশি তরুণ Jio ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য। গত তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাঁরা এই জায়গায় পৌঁছেছেন।’ আম্বানি জানান, তাঁরা ইতিমধ্যেই তাঁদের নেটওয়ার্কে এই মেড-ইন-ইন্ডিয়া 5G স্ট্যাক স্থাপনের প্রথম দিন থেকেই কয়েক মিলিয়ন ব্যবহারকারীকে পরিষেবা দিতে সক্ষম।
এ দিনের সভা থেকে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের প্রতিটি শহর, প্রতিটি তালুক এবং প্রতিটি তহশিলে Jio 5G পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংস্থার কর্ণধার। তাঁর দাবি, ‘Jio 5G হবে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত 5G।’
Jio-এর প্যান-ইন্ডিয়া ফাইবার-অপ্টিক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য ১১ লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি। যা কিনা ২৭ বারেরও বেশি পৃথিবী প্রদক্ষিণ করার জন্য যথেষ্ট।
কিন্তু বাস্তব হল, এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও ভারত স্থির ব্রডব্যান্ড পরিষেবাগুলিতে বাকি বিশ্বের থেকে পিছিয়ে রয়েছে ৷ মাত্র ২০ মিলিয়ন মানুষের সঙ্গে সংযোগে তৈরি করতে পেরেছে ভারত স্থির ব্রডব্যান্ড। যার ফলে এ দেশ বিশ্বে ১৩৮তম স্থানে রয়েছে৷ আম্বানি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলির বিপরীতে, একটি বিশাল সংখ্যক মানুষ, বাড়ি, অফিস এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নির্দিষ্ট ব্রডব্যান্ড এবং সর্বব্যাপী ইনডোর Wi-Fi পাওয়ার থেকে বঞ্চিত।’
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে, এবং দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে। Jio এটি পরিবর্তন করবে। আমরা ফিক্সড ব্রডব্যান্ড গ্রহণে ভারতকে শীর্ষ-১০-এর তালিকায় নিয়ে যাব।’