দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আরজি কর হাসপাতালের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শনিবার সিবিআই গ্রেফতার করেছে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসিকে। এই গ্রেফতারির পরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তথ্য প্রমাণ লোপাটের কথাই ফের তুলে ধরেছেন। তাঁর দাবি, এই গ্রেফতারি প্রমাণ করে, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রমাণ লোপাটে পুলিশ সরাসরি যুক্ত ছিল।
এর আগে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির ইস্যুতে সন্দীপ ঘোষ সহ চারজন গ্রেফতার হয়েছেন সিবিআই-এর হাতে। সূত্রের খবর, হাসপাতালে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রমান লোপাটের অভিযোগে ফের সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই একই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে টালা থানার ওসিকেও।
এই নিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য, ”আরজি করের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের মামলার তদন্তকে বেলাইন করতে পুলিশ সরাসরি যুক্ত ছিল প্রমাণ লোপাটের কাজে। এই গ্রেফতারি সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছে। কলকাতা পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে এই কাজ হয়েছে। তাঁরা প্রথম থেকেই সব জানতেন!”
https://x.com/SuvenduWB/status/1834998354281107479?t=BbFswv2muzMAWl89g_67aQ&s=19
নৃশংস ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে দাবি উঠেছে যে, এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নির্যাতিতার বাবা-মাও পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন। তথ্য-প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে তাও দাবি করা হয়।
এমনকি গত ১৪ অগস্ট রাতে আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ করা হয়েছিল, সেমিনার হল এবং বাকি জায়গা থেকে তথ্য মুছে দিতেই হামলা করানো হয়েছে। অন্যদিকে, সেমিনার হলের পাশে ঘরে ভাঙা নিয়েও বিতর্ক বাঁধে। শুভেন্দু অধিকারী টালা থানার ওসির গ্রেফতারির পর সেই দিকেই আবার ইঙ্গিত দিলেন বলে পর্যবেক্ষকদের মত।
সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসির গ্রেফতারির খবর যে সময়ে বেরিয়েছে তার কিছুক্ষণ আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক বাতিল হয়। এই ‘টাইমিং’ নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সাফ কথা, ”দুজনের গ্রেফতারির খবর পেয়ে আশাহত হয়ে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বৈঠক বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।”
https://x.com/SuvenduWB/status/1835001747627975163?t=WkgB8fDrFyG7DGnRSTfJSA&s=19
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করার সিবিআইয়ের। গত সোমবার তারা এক প্রস্ত স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করেছিল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সেই রিপোর্ট পড়ে বলেন, সিবিআই তাদের তদন্তের লাইন জানিয়েছে। আদালতে খোলাখুলি তা নিয়ে আলোচনা করা ঠিক হবে না। তবে সিবিআইকে বলছি সাত দিনের মধ্যে আরও একটি রিপোর্ট দিক।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির ৭২ ঘণ্টা আগে এই ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠক বাতিল হওয়ার পর অবশ্য সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত সব শর্ত তাঁরা মেনে নিয়েছিলেন। লাইভের দাবি করেননি, নিজেদের কোনও ভিডিও করার দাবিও আর রাখেননি।
শুধু সরকার যে ভিডিও করত তার ‘মিনিটস’ নিয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের আর বৈঠকে যেতে দেওয়া হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নাকি তাঁদের বলেন, ‘অনেক দেরি হয়েছে। আর আজ বৈঠক হবে না। অন্য দিন এসো।’ শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ডাক্তাররা।