RG Kar ProtestRG Kar:  সিএফএসএলের রিপোর্টে নতুন মোড়! ফের বৃহত্তর আন্দোলনে নামছেন ডাক্তাররা ?

0
21

দেশের সময় কলকাতা :আরজি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। গত ৯ অগস্ট আরজি করের ক্যাজ়ুয়ালটি বিল্ডিংয়ের চার তলার যে সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ, সেই রুমটি আদৌ কি এই ধর্ষণ-খুনের অকুস্থলই নয়?

এই সংশয় জোরালো হলো সেন্ট্রাল ফরেন্সিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির (সিএফএসএল) রিপোর্টে। সূত্রের দাবি, সিএফএসএল-এর রিপোর্ট সম্প্রতি জমা পড়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাছে।

সেই রিপোর্টে নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্যাতিতার সঙ্গে আততায়ীর সম্ভাব্য ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন মেলেনি সেমিনার রুমে থাকা নীল ম্যাট্রেসের উপর। এমনকী সেমিনার রুমের ভিতরে অন্যত্রও তেমন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তা হলে যে প্রশ্নটা স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে, সেটা হলো, আদৌ সেমিনার রুমে ওই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন করাই হয়নি?

সেক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল এবং পরবর্তী কালে সিবিআই ধর্ষণ-খুন মামলায় যে তদন্ত করল, সেখানে কি গোড়াতেই গুরুতর ত্রুটি থেকে যাচ্ছে? ওই সেমিনার রুমকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার অকুস্থল বলে তা হলে এতদিন দেখানো হলো কেন? সেটাও কি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে?আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর প্রথম থেকেই নির্যাতিতার পরিবার ও আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বড় অংশ অভিযোগ করছিলেন, এই ঘটনায় অনেক তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে।

এমনকী, হাসপাতালের অন্য জায়গায় তরুণীকে ধর্ষণ-খুন করার পরে সেমিনার রুমে দেহটি এনে পরিকল্পনামাফিক প্লান্ট করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এই অভিযোগ আগেই অস্বীকার করা হয়েছিল। আবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের গুরুতর অভিযোগ করলেও সেমিনার রুমই ঘটনার অকুস্থল কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কোনও দাবি জানায়নি।

ফের আন্দোলনের পথে চিকিৎসকরা। আরজি কর কাণ্ডে  সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরির রিপোর্ট  প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে শোরগোল তৈরি হয়েছে।
আন্দোলনের গতিপ্রকৃতির বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সন্ধে ৮টায় ধর্মতলার মঞ্চ থেকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সিএফএসএলের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সিবিআই আবার নতুন করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তদন্ত করবে? ইতিমধ্যেই শিয়ালদহ আদালতে ধর্ষণ-খুন মামলায় ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ধর্ষণ-খুনে মূল অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায়কে চিহ্নিত করে সেই ট্রায়াল প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন যদি অকুস্থল নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়, তা হলে এই ট্রায়াল কোন পথে এগোবে, তা নিয়েও সংশয়ে প্রবীণ আইনজ্ঞরা।

সিএফএসএলের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘একটা ২৪X৭ অপারেশনাল হাসপাতালের করিডরে যেখানে অনেক অফিশিয়াল অ্যাটেন্ড্যান্ট থাকার কথা, সেখানে অপরাধ ঘটানোর জন্য সবার নজর এড়িয়ে কেউ সেমিনার রুমে ঢুকে পড়বে, এটার সম্ভাবনা কম।’ ফলে সঞ্জয়ই ধর্ষণ–খুনে জড়িত, নাকি আরও কেউ ? সেই সংশয়ও তৈরি হয়েছে।

আরজি কর কাণ্ডে সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁদের জামিনের প্রতিবাদে এবং দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার দাবি-সহ একাধিক দাবিতে ২০ ডিসেম্বর থেকে ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানে বসেছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অবস্থান চলার কথা।

তারই মধ্যে সামনে এসেছে, কেন্দ্রীয় ফরেনসিক সংস্থার রিপোর্ট। তাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আরজি করের যে সেমিনার হল থেকে ডাক্তারি ছাত্রীর দেহ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে ধস্তাধস্তির কোনও প্রমাণ নেই। অর্থাৎ সেমিনার হল ক্রাইম সিনই নয় (খুন ও ধর্ষণের ঘটনা অন্য কোথাও ঘটানো হয়েছে) অথবা ঘটনার পর যাবতীয় অপরাধ মুছে ফেলা হয়েছিল।

বিষয়টি সামনে আসতেই নতুন করে শোরগোল তৈরি হয়েছে। ঘটনার পরই নির্যাতিতার শরীরের চাদর বদলানো নিয়ে বড় অভিযোগ করেছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এদিন সেই প্রসঙ্গই টেনে এনেছেন চিকিৎসকরা। বস্তুত, কেন্দ্রীয় ফরেনসিক রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যে ম্যাট্রেস থেকে ডাক্তারি ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, তাতে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন নেই। শুধু ম্যাট্রেস কেন, সেমিনার হলের কোথাওই ছাত্রীর ন্যূনতম প্রতিরোধের কোনও চিহ্ন নেই বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

অর্থাৎ এতদিন ধরে যেটিকে ক্রাইম সিন হিসেবে বলা হচ্ছিল, সেটা নাকি ক্রাইম সিনই নয়! জানা যাচ্ছে, পি কে মহাপাত্রর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল এই সিএফএসএল রিপোর্ট তৈরি করেছেন। পি কে মহাপাত্র ছাড়া ওই টিমে ছিলেন একজন বায়োলজিক্যাল, একজন ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং দু’জন ফটো বিশেষজ্ঞ।

এরপরই নতুন করে আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, আজ মঙ্গলবার রাত ৮টায় ধর্মতলার মঞ্চ থেকে বিচারের দাবিতে মশাল জ্বালানো হবে এবং তখনই আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা জানানো হবে। 

Previous articleKolkata Airport: বড়দিনের আগে বয়স হল ১০০! গ্র্যান্ড সাজগোজে কেমন লাগছে কলকাতা বিমানবন্দর, রইল ছবি
Next articleTo day Gold Rate বড়দিনের আগে কতটা সস্তা হলো সোনা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here