দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আজ শনিবার আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা হবে শিয়ালদহ আদালতে। গত বছরের ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে উদ্ধার হয়েছিল এক মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ। অভিযোগ উঠেছিল, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। ঘটনার ৫ মাস ৯ দিন পর আজ সেই ধর্ষণ-খুনের মামলায় রায় ঘোষণা করবেন অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস।
প্রথমে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত চালিয়ে ধৃত ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকেই ‘একমাত্র অভিযুক্ত’ হিসাবে বর্ণনা করে আদালতে চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত ১১ নভেম্বর। চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা সমাজের সব স্তরেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। কাতারে কাতারে সাধারণ মানুষ ‘ন্যায়বিচার’ চেয়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নেমেছিলেন। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-মিছিলের একের পর এক ‘বেনজির’ ছবি দেখেছে গোটা দেশ। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিণতি কী হয়, তা জানতে এ রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশই মুখিয়ে রয়েছে। তবে অভিযুক্ত দোষী হলে শনিবারেই তাঁর শাস্তি ঘোষণা হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তেমন হলে শাস্তি ঘোষণা হতে পারে সোমবার।
আরজি কর কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতা পুলিশ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল। তার সপ্তাহখানেক পরই মামলার তদন্তভার পায় সিবিআই। যদিও তারা সঞ্জয় ছাড়া আর কাউকেই গ্রেফতার করেনি। এমনকী এমনও দাবি করেনি যে এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার বাবা-মা থেকে শুরু করে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার, সাধারণ মানুষের একাংশ মনে করেন, এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিকবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। দাবি, সিবিআই একমাত্র সঞ্জয় রায়কেই দোষী প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। আদতে তাঁরা কোনও কাজ করেনি। তাঁদের স্পষ্ট কথা, সঞ্জয় দোষী তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত আছেন, যাদের ধরা হচ্ছে না! বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের দাবি করে নির্যাতিতার বাবা-মার আশঙ্কা, সিবিআইও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।
তাঁদের এও আশঙ্কা, তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই যেন একটা অদৃশ্য আদেশ কাজ করছে নেপথ্যে। তাঁদের আশঙ্কা, তার জন্যই সব তথ্য-প্রমাণ লোপাট হয়েছে। এখন রায়দানের পর তাঁদের কী প্রতিক্রিয়া হয়, সেটাই দেখার। তাঁদের মতো গোটা দেশ তাকিয়ে শিয়ালদহ আদালতের দিকে।